আইপিএল ক্রিকেটে কলকাতার ইডেন উদ্যানে পিচ নিয়ে একের পর এক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকি ভাষ্যকাররাও পিচের চরিত্র দেখে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। আর এই বিতর্ক এমন জায়গায় পৌঁছে যায়, যা ক্রিকেটারদের কাছে অস্বস্তি হিসেবে দেখা দিয়েছিল। বোলার বা ব্যাটসম্যানরা যখনই ব্যর্থ হচ্ছেন, তখনই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের অধিনায়ক চাপে পড়ে যান। যার ফলে কোনও জেতা ম্যাচ যেমন হারতে হয়েছে, আবার এমনও দেখা গেছে, বোলাররা বেশি প্রাধান্য পাচ্ছেন এই উইকেটে বল করতে গিয়ে। যার ফলে ব্যাটসম্যানরা অসুবিধার মধ্যে পড়ে যাচ্ছেন।
কম রানে প্রতিপক্ষ দল খেলা শেষ করলে দেখা গিয়েছে, কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটাররা তার জবাবে ব্যর্থ হচ্ছেন। আর তখনই প্রশ্ন উঠছে পিচ কেন এইভাবে তৈরি হচ্ছে বোলারদের স্বার্থে? এবারে প্রথম ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্স মুখোমুখি হয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে। সেই খেলাতে কলকাতা দলকে হারতে হয়েছিল বেঙ্গালুরুর কাছে। তখনও পিচের সমালোচনায় মুখর হয়েছিল সংবাদ মাধ্যম থেকে অনেকেই। কিন্তু পিচ কিউরেটর তা মেনে নিতে চাননি। তাঁর অভিমত ছিল, সাধারণত যেভাবে পিচ তৈরিকরা হয় ইডেন উদ্যানে, তার কোনও বদল করা হয়নি। তাহলে কেন পিচ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠছে? শুধু কলকাতার পিচ নয়, লখনউ সুপার জায়ান্টসের পিচ নিয়েও কথা উঠেছিল। তবে ইডেনের মতো এত জোরদার সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়নি লখনউকে। সিএবি ইতিমধ্যেই দুই ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে ও সাইমন ডুলকে ধারা বিবরণী দিতে বাদ দেওয়ার অনুরোধ করেছিল ইডেন উদ্যান থেকে। আসলে এই দুই ধারাভাষ্যকার ইডেনের পিচ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন।
সিএবি’র পক্ষ থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচে ভাষ্যকার প্যানেল থেকে হর্ষ ভোগলে ও সাইমন ডুলকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিসিসিআই এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে। গত সোমবার ইডেন উদ্যানে কলকাতা দলের বিরুদ্ধে গুজরাত টাইটানসের সঙ্গে খেলায় তাঁদের ধারাবিবরণী দিতে দেখা যায়নি। সিএবি’র সচিব নরেশ ওঝা বিসিসিআইকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিলেন তাঁদের যেন ইডেন উদ্যান থেকে বাতিল করা হয়। সেই চিঠিকে মান্যতা দিয়ে বিসিসিআই ধারাভাষ্যের প্যানেল থেকে তাঁদের নাম সরিয়ে দিয়েছে। শুধু যে ইডেন উদ্যানে, তা নয় কলকাতার কোনও ম্যাচে তাঁদেরকে রাখা হচ্ছে না। এবারে দ্বিতীয় বাছাই পর্ব ও ফাইনাল খেলা হবে ইডেন উদ্যানে। আইপিএলের এই দুই হাই ভোল্টেজ ম্যাচে ধারাবিবরণী দিতে তাঁদের দেখা যাবে না।
এই খবরের ভিত্তিতে ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে বলেছেন, ‘কলকাতা ও রাজস্থান ম্যাচে আমি ছিলাম না। তাই ওই ম্যাচকে নিয়েও ভুল বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে প্যানেল তৈরি হয়েছিল তাতে কলকাতা বনাম রাজস্থান ম্যাচে আমার নাম ছিল না। আইপিএল ক্রিকেট শুরু হওয়ার আগে ধারাভাষ্যকারদের তালিকা তৈরি হয়ে যায়। আমার নামে দুটো ম্যাচ বরাদ্দ হয়েছিল। প্রথম ম্যাচে ধারাবিবরণী দিলেও দ্বিতীয় ম্যাচে আমি থাকিনি। তার প্রধান কারণ হল পরিবারের এক সদস্য হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।’
আবার সিএবি’র কিউরেটর সুজন মুখার্জিকে সমর্থন জানানোয় বিতর্ক বড় আকার ধারণ করে। ভাষ্যকার সাইমন ডুল মন্তব্য করেছলেন, যদি কেকেআরের জন্য ইডেন উদ্যানের পিচ করা হয়, তাহলে হয়তো তাদের নতুন ঘরের কথা ভাবা উচিত। কিন্তু হর্ষ ভোগলে এই বিতর্ক আরও বেশি করে বাড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ঘরের মাঠে কেকেআরের সুবিধা পাওয়া উচিত। ভাষ্যকারদের নিয়ে বিতর্কে সিএবি’র পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।