• facebook
  • twitter
Thursday, 15 May, 2025

দেড় দশক পর পাকিস্তান-বাংলাদেশ বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক

দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে বৈঠকে বসতে চলেছেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসিমউদ্দিন এবং পাকিস্তানের বিদেশসচিব আমনা বালুচ।

প্রায় ১৫ বছর পরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক হতে চলেছে বৃহস্পতিবার। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে বৈঠকে বসতে চলেছেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসিমউদ্দিন এবং পাকিস্তানের বিদেশসচিব আমনা বালুচ। রাজধানী ঢাকার অভিজাত পদ্মা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। বৈঠকটি এমন একটি সময়ে হতে চলেছে যখন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আবার আগের মতো নেই। দূরত্ব বেড়েছে এই দুই দেশের। বৈঠকে যোগ দিতে ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে পাকিস্তানের একটি প্রতিনিধিদল।

বাংলাদেশে পাকিস্তানের এই ধরণের কূটনৈতিক বৈঠক বহু প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। যেমন, পাকিস্তান-বাংলাদেশের এই উদ্যোগে কী ভারতের সীমান্ত সমস্যা বাড়বে ? ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়বে কি ?  পাকিস্তান কি বাংলাদেশে তাদের হারানো স্থান ফিরে পাোয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিচ্ছে। এমনই নানা ধরণের প্রশ্ন উঠছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে।

বিদেশ সচিব পর্যায়ের এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। এই বৈঠকের আলোচ্যসূচী নিয়েও উত্তেজনা তুঙ্গে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানী শিক্ষার্থীদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। শিথিল করা হয়েছে ভিসা নীতিও। পাকিসাতন সরাসরি বাংলাদেশে বিমান পরিষেবা শুরু করেছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করছে। ফলে এর থেকে স্পষ্ট যে, শুধুমাত্র কূটনৈতিক বৈঠকের মধ্যে আলোচনা সীমিত থাকছে না।

‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ শীর্ষক এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর পাকিস্তানের বিদেশসচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস, বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। এই সফরের পর পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দারও ঢাকায় যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।যদি দার বাংলাদেশে যান, তবে ২০১২ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের কোনও বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবেন। বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহম্মদ ইকবাল হোসেন সরকারি এক সংবাদ সংস্থাকে জানান, ইসলামাবাদ ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে আগ্রহী।

১৫ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ক্ষমতা এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই চিনের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট এবং ভারতকে উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠেছে। এবার বাংলাদেশের কূটনৈতিক গুরুত্ব পাচ্ছে পাকিস্তানও। ফলে ভারতের কাছেও এটি এক নতুন চ্যালেঞ্জ। চিনে্র পর পাকিস্তানের প্রতি বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক সমীকরণ দ্রুত বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।