হয় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কাজের হিসেবে দাও, না হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত। আমেরিকায় সরকারি কর্মীরা নতুন সঙ্কটের মুখে ফেলে দিলেন ইলন মাস্ক। আমেরিকার সমস্ত সরকারি কর্মীর কাছে শনিবার এই মর্মে ইমেইল গিয়েছে। মেইলে বলা হয়েছে গত সপ্তাহে কে কী কাজ করেছেন, তার বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। সোমবার (স্থানীয় সময়) রাত ১২টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে না-পারলে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা ইমেলে ব্যাখ্যা করা হয়নি। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম প্রধান ইলন মাস্ক সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, কোনও কর্মী রিপোর্ট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দিতে না পারলে তা তাঁর ইস্তফা হিসাবে বিবেচনা করা হবে। অর্থাৎ, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে চলেছেন ট্রাম্প, মাস্কেরা। এই নির্দেশ থেকে তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
যদিও ট্রাম্প এর আগে নিজের সমাজমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, আমেরিকার সার্বিক উন্নয়নের জন্য কর্মীদের বিষয়ে আরও কঠোর হতে হবে সরকারকে। মাস্ককে এর জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘মাস্ক খুব ভাল কাজ করছেন। কিন্তু উনি আরও কঠোর হলে আমার ভাল লাগবে।’
আমেরিকার কর্মী ব্যবস্থাপনা দপ্তর অফ পারসোনেল ম্যানেজমেন্ট (ওপিএম) থেকে সরকারি কর্মীদের কাছে এই ইমেল গিয়েছে। তাতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে তাঁরা যা কাজ করেছেন, তার খুঁটিনাটি পয়েন্ট করে করে উল্লেখ করতে হবে রিপোর্টে। তবে সংবেদনশীল তথ্যের বিষয়ে রিপোর্ট তৈরির সময়ে সচেতন থাকতে হবে কর্মীদের।
স্বাভাবিকভাবে এই মেইল পাওয়ার পর ভয়ের আবহ তৈরি হয়েছে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে। চাকরি নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অনেকেই। সেই সঙ্গে দানা বাঁধছে ক্ষোভও। এই মুহূর্তে আমেরিকায় সরকারি কর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৩ লক্ষ। তার ওপর অনেক কর্মী বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে জড়িত অনেক কর্মীকে এমন জায়গায় থাকতে হয়, যেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা উন্নত নয়। অনেকে সরকারি ইমেল ব্যবহার করার মতো পরিস্থিতিতেও নেই। তাঁরা কী ভাবে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা মেনে রিপোর্ট জমা দেবেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। অনেক কর্মী জানাচ্ছেন, কাজ সম্পর্কে তথ্য কোথাও প্রকাশ করার এক্তিয়ারই নেই তাঁদের। এ বিষয়ে আইনের বাধা রয়েছে। রিপোর্টে তাই তাঁরা কিছুই লিখতে পারবেন না।
পরিস্থিতি এমন একটা পর্যায়ে গিয়েছে যে সরকারি এই নির্দেশিকা নিয়ে আমেরিকার বিভিন্ন দপ্তরে বিরোধ শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি দপ্তরের প্রধান তাঁদের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, এখনই ইমেলের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আগে ইমেলের বৈধতা যাচাই করা হবে। তার পর রিপোর্ট জমা দেবেন কর্মীরা।
২৪ ঘণ্টা আগে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের প্রধান হিসাবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কাশ পটেল দায়িত্ব নিয়েছেন। মাস্কের ইমেলের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি নিজেরডোপ[তোরের কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই ওই ইমেইলের কোনও জবাব দিতে হবে না। এফবিআই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। পরবর্তী নির্দেশিকা এলে সেই অনুযায়ী কর্মীরা কাজ করবেন।