• facebook
  • twitter
Saturday, 12 July, 2025

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিশানা করে মন্তব্যের জন্য ‘অনুতাপ’ প্রকাশ ইলন মাস্কের

এ ব্যাপারে বুধবার এক্স হ্যান্ডলে একটি সংক্ষিপ্ত বার্তায় মাস্ক লেখেন, ‘ট্রাম্পকে নিয়ে করা কিছু পোস্টের জন্য অনুতপ্ত! বিষয়টা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।’

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

গত কয়েকদিন ধরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছিলেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। অবশেষে তিনি ডিগবাজি খেলেন। ট্রাম্পকে আক্রমণ করার জন্য রীতিমতো দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর এই বিদ্রোহ প্রকাশ বড্ড বাড়াবাড়ির পর্যায়ে গিয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন টেসলা কর্তা।

প্রসঙ্গত গত কয়েকদিন ধরে ট্রাম্প ও মাস্কের বাগ্‌যুদ্ধ নিয়ে সরগরম ছিল আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহল। এমনকি মাস্ক একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করছেন বলেও খবর চাউর হয়। দু’দিন আগেও ট্রাম্পের বিরোধিতা করে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাস্ক। যে মাস্ককে কিছু দিন আগে জড়িয়ে ধরেছিলেন ট্রাম্প, যাঁর জন্য হোয়াইট হাউসে গড়ে দিয়েছিলেন আলাদা দপ্তর, সেই তিনিই হয়ে উঠেছিলেন তাঁর সরকারের পথে অন্যতম ‘কাঁটা’। শুধু তা-ই নয়, ট্রাম্প নিজের মুখেই জানান, মাস্কের সঙ্গে তাঁর সব সম্পর্ক শেষ! মাস্কও থেমে থাকেননি। সুর চড়িয়েছেন তাঁর একদা বন্ধুর বিরুদ্ধেই।

তবে এ বার সেই মাস্কের সুর যেন বেশ কিছুটা নরম। এবার ডিগবাজি খেয়ে সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টায় নামলেন ট্রাম্পের এক সময়ের এই ঘনিষ্ঠ সহযোগী। এ ব্যাপারে বুধবার এক্স হ্যান্ডলে একটি সংক্ষিপ্ত বার্তায় মাস্ক লেখেন, ‘ট্রাম্পকে নিয়ে করা কিছু পোস্টের জন্য অনুতপ্ত! বিষয়টা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।’

‘সুন্দর বিল’কে কেন্দ্র করে শুরু হয় ট্রাম্প-মাস্ক দ্বৈরথ। ট্রাম্প-মাস্কের বিরোধের সূত্রপাত ঘটে এই বিলে ট্রাম্পের স্বাক্ষর করার পর থেকেই। ট্রাম্প নিজে এটিকে ‘বড় ও সুন্দর বিল’ হিসাবে ব্যাখ্যা করলেও সেই বিল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাস্ক। তাঁর আশঙ্কা, সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দপ্তর (ডিওজিই) এতদিন যে কাজ করে আসছিল, তা ব্যর্থ হবে! শুধু আশঙ্কাপ্রকাশ করেই ক্ষান্ত হননি, ডিওজিই থেকে ইস্তফাও দেন মাস্ক।

ডিওজিই থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পকে নিয়ে একের পর এক পোস্ট করেন মাস্ক। এ-ও বলতে শোনা যায়, তিনি যদি সাহায্য না করতেন, তবে ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যেতেন। এমনকি তিনি ‘বড় বোমা’ ফেলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। মাস্ক দাবি করেন, কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের ফাইলে নাম রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। যদিও পরে সেই মন্তব্য থেকে সরে আসেন। এরপর মাস্ক সমাজমাধ্যম থেকে পোস্ট সরিয়ে দেন।

এবার রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, হঠাৎ কোন জাদুবলে ট্রাম্প ও মাস্কের সম্পর্কের এই টানাপোড়েন কেটে গেল? কেন তিনি এই ‘ইউ টার্ন’ নিলেন? অনেকে মনে করছেন, এই ঘটনা ট্রাম্প-মাস্ক ‘যুদ্ধ’ শেষের ইঙ্গিত হতে পারে। তবে কেউ কেউ আবার এ-ও মনে করছেন, ‘ভয়’ পেয়েই আবার ডিগবাজি খেয়েছেন মাস্ক। যদিও অনেকে আবার মনে করছেন, এর মধ্যে মাস্কের বাণিজ্যিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। কারণ ট্রাম্প-মাস্ক তিক্ততার পরই টেসলার শেয়ার পড়তে শুরু করেছে। সেজন্য আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বিদ্রোহের পথ থেকে পিছিয়ে এসেছেন টেসলা কর্তা।

অন্যদিকে ট্রাম্পও এই মুহূর্তে যথেষ্ট চাপে রয়েছেন। তাঁর নয়া অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করে দেশজুড়ে বিদ্রোহ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে ট্রাম্প ও মাস্কের এই সমঝোতা যে একতরফা, এমনটা নিশ্চিতভাবে অনুমান করা যাচ্ছে না।