• facebook
  • twitter
Monday, 14 July, 2025

ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’

মার্কিন ধনকুবের এবং স্পেসএক্স ও টেসলার কর্ণধার ইলন মাস্ক নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলেন। দলটির নাম রাখা হয়েছে ‘আমেরিকা পার্টি’।

মার্কিন ধনকুবের এবং স্পেসএক্স-টেসলার কর্ণধার ইলন মাস্ক নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলেন। দলটির নাম রাখা হয়েছে ‘আমেরিকা পার্টি’। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর এবং খরচে কাটছাঁট সংক্রান্ত বিলে স্বাক্ষর করার পর মাস্ক নতুন দল তৈরির কথা ঘোষণা করেন। মাস্ক প্রথম থেকেই এই বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।

এই বিলটি আগে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটে পাশ হয় এবং সম্প্রতি তা নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ্‌সেও পাশ হয়েছে। ৪ জুলাই, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে ট্রাম্প বিলটিতে সই করে আইন হিসাবে কার্যকর করেন। এর পরপরই মাস্ক তার নতুন দলের নাম ঘোষণা করেন এবং জানিয়ে দেন, ২০২৬ সালের মিড-টার্ম নির্বাচনে তার দল অংশ নেবে। মাস্কের অভিযোগ, মার্কিনিদের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। ‘আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আজ আমেরিকা পার্টির জন্ম হল’, লিখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের একদা ঘনিষ্ঠ এই সহযোগী।

নতুন দলের নাম নিয়ে মাস্ক সোশাল মিডিয়ায় একটি ভোটাভুটিও করেন, যেখানে আমেরিকার জনগণকে প্রশ্ন করা হয়, তাঁদের দ্বিদলীয় ব্যবস্থার বাইরে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা উচিত কি না। ভোটে ৬৫.৪ শতাংশ মানুষ ‘হ্যাঁ’ বলেন। মাস্ক বলেন, ‘অপচয় এবং দুর্নীতির কারণে দেশের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গিয়েছে। গণতন্ত্র নয়, একদলীয় শাসনব্যবস্থা চলছে। আমেরিকা পার্টি গঠনের মাধ্যমে জনগণের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা হবে।’

২০২৬ সালে মার্কিন কংগ্রেসের ১২০-তম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ্‌সের ৪৩৫টি আসন এবং সেনেটের ১০০টির মধ্যে ৩৩টি আসনে ভোট হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রদেশে গভর্নর নির্বাচনও হবে। এই নির্বাচনে ‘আমেরিকা পার্টি’ অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন মাস্ক। এদিকে, ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলেও মাস্ক জানিয়েছেন, তিনি ২০২৮ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান না। ২০২৬ সালের মিড-টার্ম নির্বাচনে তাঁর দল নির্বাচনে অংশ নেবে। মাস্কের এই রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে তার অনুসারী এবং দেশবাসীর মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে বড় অঙ্কের অর্থ ঢেলেছিলেন ইলন মাস্ক। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে দু’জনের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। সম্প্রতি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খুলেও পরে পিছু হটেছিলেন টেসলা কর্তা। কিন্তু সম্পর্কের ফাটল মেরামতির আগেই ফের মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমালোচনায় সরব হন মাস্ক। নেপথ্যে ‘বিগ বিউটিফুল বিল’। মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের মধ্য দিয়ে এই বিরোধ আরও তীব্র হল। এদিন আরও একবার ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’-এর কড়া সমালোচনা করেছেন মাস্ক। তিনি বলেছেন, ‘বিলটি যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেবে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নয়া বিলটি কার্যকর হলে আমেরিকার ঋণের অঙ্ক বাড়বে, জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলি ধাক্কা খাবে। শুধু তাই নয়, বিশেষজ্ঞদের আরও মত, নাগরিকদের স্বাস্থ্য বিমার জন্য ট্রাম্প সরকার যে খরচ করে, সেই বরাদ্দতেও কাটছাঁট করা হবে। ফলে স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা হারাতে পারেন নাগরিকদের একটা বড় অংশ। প্রথম থেকেই এই বিলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন মাস্ক। ট্রাম্পের তৈরি করা দপ্তর থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন। এক সময়ের বন্ধু থেকে এবার সরাসরি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়ে গেলেন মাস্ক।