সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে মুম্বইয়ে বড়সড় রেল দুর্ঘটনা ঘটল। চলন্ত ট্রেন থেকে ছিটকে পড়লেন একাধিক যাত্রী। তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও অনেকে। মুম্বরা এবং ডিভা স্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস থেকে থানের কাসারা এলাকার দিকে যাচ্ছিল একটি লোকাল ট্রেন। সেই সময়েই ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল মুম্বই-লখনউ পুষ্পক এক্সপ্রেস। একটি অন্যটিকে পেরিয়ে যাওয়ার সময় ঘটে যায় এই দুর্ঘটনা।
মহারাষ্ট্রের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৮থেকে ১২ জন চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রেলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ডিভা-মুম্বরা স্টেশন সংলগ্ন এলাকার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় যাত্রিবাহী ট্রেন থেকে কয়েক জন পড়ে গিয়েছেন। কী কারণে এই দুর্ঘটনা, এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্রের দাবি, ট্রেনের ওই কামরায় অতিরিক্ত যাত্রী উঠে পড়েছিলেন। সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রেনটিতে এতই ভিড় ছিল যে পা রাখার জায়গাটুকুও মেলেনি যাত্রীদের। হাতল ধরে রীতিমতো শূন্যে ঝুলছিলেন তাঁরা। ওই অবস্থায় প্রবল ভিড়ের চাপে চলতে চলতেই রেললাইনে পড়ে যান অন্তত ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী। ট্রেন থেকে যাঁরা পড়ে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এক মহিলাও ছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রেল আধিকারিকরা। এই দুর্ঘটনার জেরে মুম্বইয়ের অতি ব্যস্ত সেন্ট্রাল লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দুর্ভোগে পড়েন অন্য যাত্রীরা।
অসমর্থিত সূত্রের খবর, কালওয়ার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৫ যাত্রীর। তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছর। আপাতত তাঁদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
সাংসদ নরেশ মাস্কে ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়ে বলেন, ‘দুর্ঘটনার সঠিক কারণ প্রকাশ করা দরকার। কোনও ধাক্কাধাক্কি কি হয়েছিল? সেটা সবার আগে জানা দরকার। এক্সপ্রেসে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে না।’ সেন্ট্রাল রেলওয়ের জনসংযোগ আধিকারিক প্রবীণ পাতিল বলেন, ‘যাত্রীরা এক্সপ্রেস থেকে পড়ে গিয়েছেন, নাকি লোকাল ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছেন, তা এখনও জানা যায়নি। কাসারা লোকালের গার্ড প্রথমে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করেন।’
এই দুর্ঘটনার কারণ জানতে ইতিমধ্যেই রেলের তরফে তদন্ত শুরু হয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডিভা এবং মুম্বরা স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে ৮ জন যাত্রী ট্রেন থেকে পড়ে যান। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। মৃতদের প্রতি আমার আন্তরিক শোক জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য সর্বশক্তিমানকে প্রার্থনা করছি। ঘটনাটির সঠিক কারণ নির্ধারণ করার জন্য রেল তদন্ত শুরু করেছে।’
এদিকে দুর্ঘটনার পর রেলের তরফে জানানো হয়েছে, মুম্বই সাব-আরবান রেলওয়ের জন্য যে নতুন রেকগুলি তৈরি হচ্ছে, সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও সারাই করতে দেওয়া রেকগুলির ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ করা হবে।