অন্ধ্রপ্রদেশে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ কুর্নুল জেলার চিন্নাটেকুর গ্রামের কাছে একটি বাইকের সঙ্গে সংঘর্ষের পর বাসে আগুন লাগার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা অন্তত ২৫। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারেননি অনেক অসহায় যাত্রীই। এসি বাসের জানলা ভেঙে কোনওক্রমে বেঁচে ফিরেছেন কিছু জন যাত্রী। গুরুতর জখম অবস্থায় এখনও হাসপাতালে ভর্তি একাধিক। কিন্তু বাসের দুই চালক এই মুহূর্তে তদন্তকারীদের নজরে।
কোনওরকমে রক্ষা পাওয়া যাত্রীদের কাছে বেজায় নিন্দিত বাসের প্রধান চালক, বরং হিরো সহকারী চালক। পুলিশ সূত্রে খবর, যিনি বাসের আসল চালক এমন ভয়াবহ ঘটনার পর এতজন যাত্রীকে আটক অবস্থায় রেখেই পালিয়ে যান। উল্টে এগিয়ে আসেন বাসের সহকারী। তিনিই এসি বাসের জানলা ভেঙে যাত্রীদের বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেন। এই নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Advertisement
কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই দুই বাসচালকের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। তবু, সহকারী বাস চালকের সাহায্যে কিছুজন প্রাণে রক্ষা পান। কিন্তু যিনি স্টিয়ারিং ধরেছিলেন সবার আগে চম্পট দেন তিনিই।
Advertisement
আগুনে ঘি ঢালল স্মার্টফোন
বাসে আগুন লেগেছিল ঠিকই কিন্তু তা এত ভয়াবহতার সঙ্গে ছড়িয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তদন্তকারীরা সামনে এনেছেন এক হাড়হিম তথ্য। আগুন ছড়িয়েছে বাসে থাকা ২৩৪টি নতুন ফোনের জন্য। ব্যবসার সূত্রে ফোনগুলি পাঠানো হচ্ছিল বেঙ্গালুরুতে। নতুন ফোনের ব্যাটারি ফেটেই ভয়াবহতা বেড়েছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বাইকে ধাক্কা লাগার পর বাসে আগুন লাগে, এরপর তেলের ট্যাঙ্কারটিও খুলে যায়। এরপর একেরপর এক ফোনের বিস্ফোরণ শুরু হয়। বাসের ভিতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে নিমেষে। বাসের এসিতেও বিস্ফোরণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানান, গোটা বাস কার্যত আগুনের গ্রাসে চলে যাওয়ার জেরে যারা জানলা ভাঙতে পেরেছিলেন তারা ছাড়া আর কেউ প্রাণ ফিরে পাননি।
উল্লেখ্য, বেসরকারি বাসটি ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। শুক্রবার ভোরে কুর্নুল জেলার চিন্নাটেকুর গ্রামের কাছে একটি বাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বাসটির। সংঘর্ষের পর বাসের সামনে আটকে যায় বাইকটি। এভাবে কিছুটা যাওয়ার পরই বাসটিতে দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে বাসটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুন লাগার ফলে বাতানুকূল ওই বাসে শর্ট সার্কিট হয়। তার ফলেই বাসের স্বয়ংক্রিয় দরজা খোলেনি। এর ফলে বেশিরভাগ যাত্রী বেরোতে পারেননি। ফলে আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় একের পর এক অসহায় যাত্রীর। দমকলের কয়েকটি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
Advertisement



