শুধু পথ দুর্ঘটনাতেই মৃত ১৯৮ পরিযায়ী শ্রমিক

মার্চের ২৫ তারিখ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে ১ হাজার ৪৬১’টি পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাতে মৃত্যু হয়েছে ১৯৮ জন পরিযায়ী শ্রমিকের, আহত হয়েছেন ১৩৯০ জন।

Written by SNS New Delhi | June 3, 2020 4:19 pm

পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছে পরিযায়ী শ্রমিক'রা। (Photo by Money SHARMA / AFP)

লকডাউনের পর সবচেয়ে বেশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে পরিযায়ী শ্রমিকরা। লকডাউনের কারণে তাদের বাড়ি ফিরতে না পারা, খাদ্য সঙ্কট, হাজার হাজার কিলোমিটার হাঁটা, এই সবই এখন দেশের করোনা পরিস্থিতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণের মূল্য ঠিক কতটা, তা স্পষ্ট হল এক রিপোর্টে।

মার্চের ২৫ তারিখ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে ১ হাজার ৪৬১’টি পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাতে মৃত্যু হয়েছে ৭৫০ জনের। আর তার মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ১৯৮ আহত হয়েছেন ১৩৯০ জন। এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, যে ১৯৮ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন, তাদের সকলেরই তাগিদ ছিল বাড়ি পৌছানোর। আর সেই বাড়ি ফিরতে গিয়েই কখনও মালগাড়ির নিচে, আর কখনও বা লরির চাকায় চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন এই গরিব মানুষগুলো।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন তাদেরকে কি লকডাউন ঘোষণার আগে বাড়ি ফেরানো যেতো না? তাহলে অন্তত হয়তো তারা প্রাণে বেঁচে যেতে পারতেন। এই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুসারে সবচেয়ে শীর্ষে রয়েছে যোগীর উত্তরপ্রদেশ। পথ দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর ৩০ শতাংশ উত্তরপ্রদেশে। সেখানে মারা গিয়েছেন ৯৪ জন। মধ্যপ্রদেশ ৩৮, তেলেঙ্গানায় ১১, বিহারে ১৬ জন ও মহারাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।

এদিকে, মায়ের টানে ২০০০ কিলোমিটার হেঁটে এসে সাপের কামড়ে মারা গেলেন পরিযায়ী শ্রমিক। বাড়ি ফেরার মতো হাতে পয়সা ছিল না। বেঙ্গালুরু থেকে হেঁটে উত্তরপ্রদেশের বাড়িতে আসার জন্য ১২ দিন ধরে ২০০০ কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে তাকে। এতখানি হেঁটে পায়ে অনেকটা ধুলোবালি লেগে গিয়েছিল। বাড়ির প্রায় কাছাকাছি এসে একটি জলাভূমিতে পা ধুতে নামেন সলমান। সেখানেই সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় তার।

অপেক্ষাই সার হল মায়ের। ছোট ছেলে বাড়ি ফিরবে বলে আসা করেছিল মা। বাড়ি ফেরার নির্ধারিত সময়েরও আরও একদিন পেরিয়ে যাওয়ার পর ছেলে বাড়ি না ফেরায় তাকে খুঁজতে বেরোয় পরিবারের লোকো। মাঠ থেকে উদ্ধার হয় দেহ। তখনই দেখা যায়, পায়ে রয়েছে সাপের কামড়। ছেলে আর নেই, এই খবর শোনার পর মা রূপসানাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। একদিকে মায়ের চিকিৎসা, অন্যদিকে ছোট ভাইয়ের অন্ত্যেষ্টি। সব মিলিয়ে নাজেহাল পরিবারের লোকেরা।