যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলার ঘটনার পর রবিবার থেকে হুগলির রিষড়ায় আয়োজক শতদ্রু দত্তের বাড়ির সামনে নিরাপত্তা আরও জোরদার করল পুলিশ। সম্ভাব্য বিক্ষোভ ও অশান্তি ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা বলে জানিয়েছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট।
শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনার পরই শহরের বিমানবন্দর থেকে শতদ্রু দত্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনিই কলকাতায় লিওনেল মেসিকে আনার মূল আয়োজক ছিলেন। গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশঙ্কা তৈরি হয়, টিকিটের টাকা ফেরতের দাবিতে ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা ঋষড়ায় তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে পারেন। সেই কারণেই রাতভর অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয় এবং একটি স্থায়ী পুলিশ পিকেটও বসানো হয়।
Advertisement
রবিবার সকাল থেকেই রিষড়ার বাঙ্গুর পার্ক এলাকায় অবস্থিত শতদ্রু দত্তের বাড়ির সামনে একের পর এক পুলিশ ভ্যান এসে দাঁড়াতে শুরু করে। শনিবার সকাল পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও দুপুর গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় পরিবেশ। বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ রাখা হয়, গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে চাপা উত্তেজনা।
Advertisement
একই সঙ্গে রিষড়া থানাতেও বাড়তি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকেরা। তাঁদের বক্তব্য, ঘটনার প্রভাব যাতে আশপাশের এলাকায় না পড়ে, সে দিকেই বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, যখন হাজার হাজার দর্শক অভিযোগ তোলেন যে চরম অব্যবস্থাপনার কারণে তাঁরা প্রিয় তারকা লিওনেল মেসির দেখা পাননি। অভিযোগ, ভিআইপি ব্যবস্থার কারণে সাধারণ দর্শকদের দৃষ্টি বাধাপ্রাপ্ত হয়। বিপুল দাম দিয়ে টিকিট কেটে স্টেডিয়ামে এসেও মেসির এক ঝলক না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সমর্থকেরা।
এর জেরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। ভাঙচুর চালানো হয় বিভিন্ন জায়গায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করে পুলিশ। ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেন।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক বলেন, ‘গতকালের ঘটনার পর সমর্থকেরা আবার প্রতিবাদে নামতে পারেন—এই আশঙ্কা থেকেই সতদ্রু দত্তের বাড়ির সামনে এবং ঋষড়া থানায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই এই সতর্কতা।’
Advertisement



