• facebook
  • twitter
Sunday, 3 August, 2025

মাধ্যমিকে জেলার জয়জয়কার ৮৬ শতাংশের বেশি পাশের হার

ওদিকে মাধ্যমিকের অস্থায়ী মেধাতালিকায় রাজ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুলের ছাত্র অদৃত সরকার।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

প্রকাশিত হল ২০২৫-এর মাধ্যমিকের ফলাফল। মাধ্যমিকের ৭০ দিন পর ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবছর ৮৬.৫৬ শতাংশ পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছেন। গতবছর সফল হয়েছিলেন ৮৬.৩১ শতাংশ। সেক্ষেত্রে গতবছরের তুলনায় এবছর ০.২৫ শতাংশ বেশি পড়ুয়া পাশ করেছেন।
শুক্রবার সকাল ৯ টা নাগাদ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করেন পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি প্রথম দশের অস্থায়ী মেধাতালিকাও ঘোষণা করেছেন।
পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছে, এবারে ৯০ থেকে ১০০ নম্বর (এএ) পেয়েছেন ১০ হাজার ৬৫৭ জন পড়ুয়া। ৮০ থেকে ৮৯ নম্বর পেয়ে (এ প্লাস) পেয়েছেন ২৫ হাজার ৮২০ জন পড়ুয়া এবং ৬০ থেকে ৬৯ নম্বর পেয়ে (এ) পেয়েছেন ৯১হাজার ২৭৩ জন পড়ুয়া।
প্রকাশিত ফলাফলে এবারও জেলার জয়জয়কার। প্রথম ১০-এর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে ৬৬ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই জেলার স্কুলের ছাত্রছাত্রী। যদিও কলকাতার মধ্যে অষ্টম স্থানে রয়েছেন ১ জন ছাত্রী।
ওদিকে মাধ্যমিকের অস্থায়ী মেধাতালিকায় রাজ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুলের ছাত্র অদৃত সরকার। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬। যা ৯৯.৪৩ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন মোট দু’জন। প্রথমজন মালদা রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের পড়ুয়া অনুভব বিশ্বাস। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৪। যা ৯৯.১৪ শতাংশ। অপরজন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর হাই স্কুলের পড়ুয়া সৌম্য পাল। তাঁরও প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৪। যা ৯৯.১৪ শতাংশ। এবছরের মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বাঁকুড়ার কতুলপুর সরোজ বাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ঈশানি চক্রবর্তী। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৩। যা ৯৯ শতাংশ। চতুর্থ স্থানেও দু’জন রয়েছেন। পূর্ব বর্ধমানের নিরোল হাই স্কুলের ছাত্র মহম্মদ সেলিম। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯২। যা ৯৮.৮৬ শতাংশ। অপর জন পূর্ব মেদিনীপুরের কনটাই মডেল ইনস্টিটিউশনের সুপ্রতীক মান্না। তাঁর প্রাপ্ত নম্বরও ৬৯২। যা ৯৮.৮৬ শতাংশ। পঞ্চম স্থান দখল করেছেন মোট ৪ জন পড়ুয়া। হুগলির গৌড়হরি হরদাস ইনস্টিটিউশনের ছাত্র শিঞ্চন নন্দী। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। যা ৯৮. ৭১ শতাংশ। কামারপুকুর আরকে মিশন মাল্টিপারপাস স্কুলের মহাম্মদ আসিফ চৌধুরী। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। যা ৯৮.৭১ শতাংশ। ওদিকে একই স্থানে রয়েছেন হুগলির ইটাচুনা শ্রী নারায়ণ ইনস্টিটিউশনের ছাত্র দীপ্তজিৎ ঘোষ, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের ছাত্র সোমতীর্থ করণ। এঁদের প্রত্যেকের একই নম্বর। অন্য দিকে, কলকাতার মধ্যে অষ্টম স্থানে রয়েছেন রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুলের ছাত্রী অবন্তিকা রায়। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। যা শতাংশের নিরিখে দাঁড়াচ্ছে ৯৮.২৯। এছাড়াও ষষ্ঠ স্থানে ৫ জন, সপ্তম স্থানে ৫ জন, অষ্টম স্থানে ১৬ জন, নবম স্থানে ১৪ জন এবং দশম স্থানে ১৬ জন রয়েছেন।
পর্ষদ জানিয়েছে, এবছর মোট ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪২৫ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছিলেন। যার মধ্যে ছাত্রদের সংখ্যা ছিল ৪ লক্ষ ২৫ হাজার ৮৮১ জন এবং ছাত্রীদের সংখ্যা ছিল ৫ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫৪৪ জন। সেক্ষেত্রে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা ২৭.৬৩ শতাংশ বেশি ছিল। পাশাপাশি ৯ লক্ষ ১৩ হাজার ৮৮৩ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭ লক্ষ ৯১ হাজার ৮৮ জন। অর্থাৎ এবারে ৮৬.৫৬ শতাংশ হারে পাশ করেছেন। এছাড়াও পাশ শতাংশের হার সব থেকে বেশি পূর্ব মেদিনীপুরে। যা ৯৬.৪৬ শতাংশ। তার পরই আসছে কালিম্পং। সেখানে পাশের হার ৯৬.৯ শতাংশ। এদিকে কলকাতায় পাশের হার ৯২.৩০ শতাংশ। তারপরই পশ্চিম মেদিনীপুর। সেখানে পাশের শতাংশ ৯০.৫২ শতাংশ।
এছাড়াও পর্ষদ আরও জানিয়েছে, এবারে উল্লেখ্যযোগ্যভাবে সংখ্যালঘু ছাত্রীদের হার ছাত্রদের তুলনায় বেড়েছে। এবারে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৮০৪ জন ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। আর সংখ্যালঘু ছাত্র ছিল ১ লক্ষ ৪ হাজার ৪৭১ জন। ওদিকে বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থীদের হার ৭৫.৩৫ শতাংশ বেড়েছে। শুধু তা-ই নয়,
এবছর তপশিলি জাতি এবং উপজাতি পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা যথাক্রমে ৮৪.৩ শতাংশ এবং ৭৪.৩০ শতাংশ ছিল।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ১০ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়। শেষ হয় ২২ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ শেষ হয় ২ এপ্রিল। ২,৬৮৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এবছর পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের জন্য ২০ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল হয় এবং ৮৮ জন নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে।