সন্ত্রাস দমনে পাক বুলি

পাক প্রধানমন্ত্রী মুখে যা বলেন,কাজে তা করেন না।

Written by SNS Kolkata | May 9, 2019 7:19 am

ইমরান খান (File Photo: AFP)

সমালােচনায় জর্জরিত পাকিস্তানের ইমরান খানের সরকার আজকাল সন্ত্রাস দমন নিয়ে কিছু কিছু কার্যকরী পদক্ষেপের কথা বলতে শুরু করেছে।কিন্তু এখনো পর্যন্ত কাজে কিছু করে দেখাতে পারেনি। যার জন্য পাক সরকার সত্যিই সন্ত্রাস নির্মূল করতে চায় ,তা বিশ্বাস করা কঠিন।আবার সন্ত্রাসবাদকে ঘরে পুষেই ,পাক প্রধানমন্ত্রী আগ বাড়িয়ে সম্প্রতি বলেছেন,ভারতে নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হলে, সেই সরকারের সঙ্গে আলােচনায় বসবেন,দুই দেশের সমস্যা মেটাতে এবং সম্পর্কে উন্নতি ঘটাতে।প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ইমরান খান ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সুস্থির করতে এ পর্যন্ত অনেক কথা বলেছেন,অনেক বিবৃতি দিয়েছেন,কিন্তু সম্পর্কে তাে কোনও উন্নতি হয়েইনি,বরং পুলওয়ামার পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি হানায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের প্রাণ গেছে। পৃথিবীর সব দেশ এই ঘটনার নিন্দা করেছে এবং পাক সরকারকে অবিলম্বে সন্ত্রাস দমনে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।ভারতও বসে থাকেনি,বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে।তারপর অল্প সময়ের জন্য দুই দেশের মধ্যে আকাশযুদ্ধও হয়েছে। তাতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উভয় পক্ষেরই।

সুতরাং এই ঘটনাবলি প্রমাণ করেছে ,পাক প্রধানমন্ত্রী মুখে যা বলেন,কাজে তা করেন না।ভারতের নির্বাচন শেষে যে সরকার গঠিত হবে,তার সঙ্গে আলোচনায় যদি খানসাহেব বসেনও ,তাতে কোনও লাভ হবে বলে মনে হয় না।কারণ কাশ্মীর সীমান্তে জঙ্গি তৎপরতা বজায় রেখে এই আলােচনা হবে,তাতে সুফল মিলতে পারে না।খানসাহেব মজার লােক, একজন ঝানু প্রাক্তন ক্রিকেটার , সুতরাং খেলতে জানেন ভালই।তাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ না নিয়েই তিনি ভারতের সঙ্গে খেলতে শুরু করেছেন।যদিও ক্রিকেট নয়। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের মেকি খেলা। ইমরান যখন ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা বলেন,তখন শুনতে ভালই লাগে।কিন্তু ইচ্ছেটা কতটা আন্তরিক , প্রশ্ন তা নিয়েই।জন্মলগ্ন থেকেই পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে একটা বৈরিতা জিইরে রেখে চলেছে , সমর সম্ভার বাড়িয়েছে , তার ফলে উন্নয়নও পিছিয়ে পড়েছে । এখন সন্ত্রাসের কোলে দোল খাচ্ছে পাকিস্তান।তাই পৃথিবীর সব দেশ সন্ত্রাসকে মদত দেওয়ার জন্য পাক নিন্দায় সরব হয়েছে।

সম্প্রতি একটি খবর নজরে এল পাকিস্তান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের ৩০ , ০০০ মাদ্রাসাকে শিক্ষামন্ত্রকের অধীনে নিয়ে আসা হবে।এই মাদ্রাসায় পঠনপাঠন মন্ত্রকের নিয়মনীতি এবং চালু পাঠ্যক্রম অনুসারে চলবে।পাকিস্তানে সেই অর্থে কোনও প্রাইমারি স্কুল নেই – মাদ্রাসাই ইতস্তত গজিয়ে উঠেছে।পড়ুয়াদের ইসলামি রীতিনীতি শিক্ষাদানকল্পে।তা যদিও ভাল , কিন্তু যেটা উদ্বেগের এবং উৎকণ্ঠার , তা হল এই ৩০ , ০০০ মাদ্রাসার মধ্যে ন্যূনতম ১০০ মাদ্রাসা পড়ুয়াদের জঙ্গি কার্যকলাপে প্রশিক্ষণ দেয়।পাক সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই একশাে মাদ্রাসাকে সন্ত্রাসবাদের ওপর শিক্ষা দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ  করতে হবে এবং দেশের শিক্ষানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন করে শিক্ষাব্যবস্থা চাল করতে হবে। জানা যায় , প্রতিবছর এই মাদ্রাসা থেকে সন্ত্রাসবাদের ওপর শিক্ষা নিয়ে যারা বের হচ্ছে , তারা পরবর্তীকালে জঙ্গি সংগঠনে যােগ দিচ্ছে এবং অপারেশনে অংশগ্রহণ করছে।তাহলে এটা দিনের আলাের মতাে প্রতিভাত যে কত কমবয়সী ছেলেমেয়ে , সন্ত্রাসবাদে শিক্ষা নিয়ে ধ্বংসাত্মক , নাশকতামূলক কাজে অংশগ্রহণ করছে । আর পাক সরকার প্রচুর অর্থসাহায্য করে জঙ্গি সংগঠনগুলিকে বেশি শক্তিশালী করে তুলছে । কিন্তু তাতে কী লাভ হচ্ছে এই দুই টুকরাে হয়ে যাওয়া পাকিস্তানের ? জঙ্গিদের পিছনে প্রভূত অর্থ খরচ করতে গিয়ে তার উন্নয়নের অর্থের জোগান কমে যাচ্ছে । জঙ্গিদের প্রতিপালন এবং সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া পাক সরকার একটি নীতি হিসেবে বেছে নিয়েছে। আর জঙ্গিদের ধ্বংসাত্মক কাজে লাগানাে হচ্ছে করে সীমান্তে ।এতে কী লাভ হচ্ছে পাকিস্তানের ? উন্নয়নের নিরিখে পাকিস্তান দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে । আর ভারতকে শত্রু ভেবে  কাশ্মীর কাশ্মীর বলে অহরহ রব তুলে চলার ফলে দেশের সার্বিক বিকাশের দিকে নজর দিতে পারছেনা ওই দেশটি। তবে মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে পাক সরকারের মাথায় যে সুবুদ্ধি জাগ্রত হয়েছে , তা যদি সত্যিই কার্যে পরিণত হয় , তাহলে পাক সরকারের সাধুবাদ প্রাপ্য। কিন্তু আশঙ্কা এই সুবুদ্ধি দুর্বুদ্ধিতে পরিণত হবে না তাে ?