• facebook
  • twitter
Wednesday, 26 March, 2025

বিজেপির শরিকি কাঁটা

এই দুটি কেন্দ্রেই সহজেই জয়ী হয়েছে আপ।

ফাইল চিত্র

দিল্লির বিপুল জয় বিজেপিকে স্বস্তি দিলেও শরিকি চিন্তা নতুন করে মাথা চাড়া দিল গেরুয়া শিবিরে। দিল্লির নির্বাচনে বিরোধী দলগুলি উড়ে গেলেও ধরাশায়ী হয়েছে এনডিএ-র দুই শরিক নীতীশ কুমারের জেডিইউ ও চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি। ৪৮ আসনে বিজেপি বিপুল ভোট পেলেও তার ছিটেফোঁটা ভোট পড়েনি শরিকদের ঘরে। আর এটাই ভাবাচ্ছে বিজেপি নেতাদের। বিহার ভোটের আগে নীতীশ-চিরাগদের এই চরম ব্যর্থতা আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নেয় সেই দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

দিল্লি বিধানসভায় ৭০ আসনের মধ্যে দুটি আসন বিহারের এই দুই শরিক জেডিইউ ও এলজেপিকে ছেড়েছিল বিজেপি। রারি আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন জেডিইউ-এর শৈলেন্দ্র কুমার ও দেওলি আসনে প্রার্থী হল লোক জনশক্তি পার্টির দীপক তম্বর। এই দুটি কেন্দ্রেই সহজেই জয়ী হয়েছে আপ। ২০,৬০১ ভোটে হেরেছেন শৈলেন্দ্র এবং ৩৬ হাজার ভোটে হেরেছেন দীপক। আর এই ফলাফলেই অশনি সংকেত দেখছে বিজেপি। কারণ, পূর্বাঞ্চলী (বিহার ও উত্তরপ্রদেশ) ভোটারদের নজরে রেখেই এই দুই আসন বিহারের শরিকদের ছেড়েছিল বিজেপি। ফলে বিহার ভোট মাথায় রেখে দিল্লির অ্যাসিড টেস্টে ফেল করেছে দুই শরিক বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজধানীর মাটিতে বিহারী আস্থা অর্জনের চেষ্টা অবশ্য বিজেপির জন্য এই প্রথমবার নয়, ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও এই বিহারী ভোটকে মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মুখ করা হয়েছিল মনোজ তিওয়ারিকে। সেবারের নির্বাচনে আপের কাছে ধুয়ে মুছে যায় বিজেপি। এবার অবশ্য বিরাট জয় পেলেও বিহারী শরিকদের ব্যর্থতায় চাপে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহেরা।

বছরের শেষের দিকেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। এই রাজ্যের একটি বড় অংশে রয়েছে পূর্বাঞ্চলী ভোটার। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, জল মাপতেই দিল্লিতে দুই আসন বিহারের শরিকদের ছাড়া হয়েছিল। তবে ভোটের ফল বলছে, পূর্বাঞ্চলী ভোটাররা বিজেপিতে আস্থা রাখলেও এনডিএ-র শরিকদের উপর বিন্দুমাত্র ভরসা তাঁদের নেই। ভোট শতাংশের হিসেবে দিল্লিতে মাত্র ০.০১ শতাংশ ভোট পেয়েছে জেডিইউ-এর দল। এদিকে আসন্ন বিহার নির্বাচনে ২৪৩ আসনের মধ্যে ২২৫ আসনে জয় পাবে বলে বার্তা দিয়েছে এনডিএ। সেক্ষেত্রে, বিজেপি নিজের উপর ভরসা রাখলেও, শরিকরা কতদূর কী করতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। পরিস্থিতি তেমন হলে শরিকদের আসনে কোপ পড়তে পারে। তা হলে আবার কেন্দ্রে বিজেপিকে ছেড়ে কথা বলবেন না নীতীশ, চিরাগরা।
অবশ্য রাজনৈতিক মহলের দাবি, দিল্লির মাত্র দুটি আসন দিয়ে এতদূর বিচার করা ঠিক নয়। তার উপর দিল্লির মাটিতে জেডিইউ ও এলজেপির সংগঠনিক শক্তি নেই বললেই চলে। সবকিছু মাথায় রাখলেও দিল্লির ভোটে শরিকদের এই ব্যর্থতা বিহার ভোটে বিজেপি একেবারে এড়িয়ে যাবে বলে মনে হয় না।