নাগাল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম প্রতীক জুকো উপত্যকা টানা তিন দিন ধরে দাবানলের আগুনে পুড়ছে। প্রবল হাওয়ার দাপটে সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের জঙ্গলেও। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, জুকো উপত্যকার পাশের জাপফু পর্বতশ্রেণিতেও দাবানলের থাবা পড়েছে। আগুনের বিস্তার নিয়ে চরম উদ্বেগে প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার থেকেই আকাশপথে আগুন নেভানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার প্রথম জুকো উপত্যকার জঙ্গলে আগুন লাগে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ১.৩ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোহিমা জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, শুরুতে আগুন সীমিত এলাকায় থাকলেও হাওয়ার গতি বেড়ে যাওয়ায় দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। পাহাড়ি এলাকায় শুষ্ক ঘাস ও ঝোপঝাড় থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
Advertisement
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, জুকো উপত্যকার যে অংশে আগুন লেগেছে, তা অত্যন্ত দুর্গম। খাড়া পাহাড়ি ঢাল এবং সড়কপথ না থাকায় দমকলের গাড়ি সেখানে পৌঁছানো কার্যত দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই কারণেই নাগাল্যান্ড বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ভারতীয় বায়ুসেনার সহায়তায় একটি হেলিকপ্টার এনে আকাশপথে জল ছিটিয়ে আগুন নেভানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
Advertisement
স্থানীয় গ্রাম প্রশাসন ও বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, খোনোমা গ্রামের কাছাকাছি এলাকায় এই দাবানলের সূত্রপাত। অভিযোগ, স্থানীয় চার জন ট্রেকার নিজেদের তাঁবুর সামনে আগুন জ্বালিয়েছিলেন। জল আনতে যাওয়ার সময় সেই আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং মুহূর্তের মধ্যে জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের মাঝে আটকে পড়েন ওই চার জন। শনিবার তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়ার পর তাঁরা আগুন জ্বালানোর কথা স্বীকার করেছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি।
এই ঘটনার পর নাগাল্যান্ড সরকার স্থানীয় বাসিন্দা, ট্রেকার ও পর্যটকদের জুকো উপত্যকা এবং আশপাশের জঙ্গল এলাকা থেকে নিরাপদ দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, বনাঞ্চলে আগুন জ্বালানো নিয়ে কঠোর সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, হাওয়ার গতি না কমলে দাবানল আরও বিস্তৃত হতে পারে, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনবে।
Advertisement



