আগুন থামার লক্ষণ নেই। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল। আর এই আগুনে ঘি ঢালছে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ধেয়ে আসা শক্তিশালী টর্নেডো। আগুনে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত দাবানলে ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যার মধ্যেই ৮ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে পশ্চিমে পালিসেডেসের থেকে। ইয়াটনের দিক থেকে বাকি ১৬ জনের দেহ মিলেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমেরিকার ইতিহাসে এটিই হয়তো সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে জানিয়েছেন ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নর গভিন নিউসম। এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ থেকে ১৫০ মিলিয়ন ডলার। দমকলবাহিনী যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করলেও সাময়িকভাবে বিরতি নিয়েছে। কারণ দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ধেয়ে আসছে টর্নেডো। ফলে হওয়ার দাপট অনেকটাই বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কাজ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন দমকল কর্মীরা।
এই শক্তিশালী টর্নেডো ধেয়ে আসায় কিভাবে পরিইস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে, তা নিয়ে নিয়ে কপালে ভাঁজ ক্যালিফোর্নিয়ার আবহাওয়া দপ্তরের। রবিবার রাত থেকেই দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার দিক থেকে শুষ্ক হাওয়া ‘সান্টা আনা’ এগিয়ে আসছে। যার গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৯৬ কিলোমিটার। হাওয়ার গতিবেগ যত বাড়ছে, আগুনের লেলিহান শিখা ততই ছড়িয়ে পড়ছে। দমকল কর্মীরা প্রাণপনে চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। পাশ্ববর্তী দেশ মেক্সিকো ও কানাডার দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়েছে আগুন নেভানোর কাজে সাহায্য করার জন্য। কিন্তু কীভাবে এই আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে তার দিশা পাচ্ছেন না দমকল কর্মীরা।
Advertisement
তবে শুধু আগুনকে নিয়ন্ত্রণ করাই নয়, আরও একটি বিযয় ঘুম কেড়েছে স্থানীয় প্রশাসনের। দাবানলে পুড়ে যাওয়া লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে প্রায় ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এই বিপর্যয়ের মধ্যে প্রশাসনকে চিন্তায় ফেলেছে লুটপাটের অভিযোগও। ভুয়ো দমকলকর্মী সেজে বাড়ির ভিতর ঢুকে চুরি করে পালাচ্ছে লুটেরারা। লস অ্যাঞ্জেলেসের এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, এই বিপর্যয়ের মধ্যে লুটপাট উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সব জায়গায় নজরদারি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই তাঁরা চুরির অভিযোগে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ২ জন ভুয়ো দমকলকর্মীকেও ধরা হয়েছে।
Advertisement
অন্যদিকে লস অ্যাঞ্জেলস এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনকে তোপ দেগেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হবু প্রেসিডেন্টের কথায়, অপদার্থ প্রশাসনের গাফিলতিতেই এইভাবে আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে বিরাট এলাকা। পুরো ব্যার্থতার দায় তিনি চাপিয়েছেন ডেমোক্র্যাট নেতা গ্যাভিন নিউসমের ওপর। যদিও গ্যাভিন পাল্টা উত্তরে বলেছেন, ট্রাম্প নিজে এসে গোটা পরিস্থিতি পরিদর্শন দেখে যান।
Advertisement



