সৌহার্দের পরিবেশে ধনকড়-মমতা বৈঠক

দীর্ঘদিন টালবাহানার পর অবশেষে সােমবার দুপুরে রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের প্রায় এক ঘন্টার বৈঠক হয়।

Written by SNS Kolkata | February 18, 2020 4:52 pm

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ও তাঁর স্ত্রী সুদেশ ধনকড়। (Photo: IANS)

রাজ্যপাল পদে জগদীপ ধনকড় আসার পর থেকেই নবান্ন-রাজভবনের সঙ্গে সংঘাত অব্যাহত। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন ইস্যু এবং বিধানসভা বিল পাস করা নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। রাজ্যপালের সই না হওয়ায় বিভিন্ন বিল বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে পাশ করা হলেও তা আটকে থাকে। রাজ্যপাল বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন, সরকার পক্ষের সঙ্গে বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুখােমুখি আলােচনার মাধ্যমেই এইসব সমস্যার সমধান সম্ভব। 

দীর্ঘদিন টালবাহানার পর অবশেষে সােমবার দুপুরে রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের প্রায় এক ঘন্টার বৈঠক হয়। এই বৈঠকের পর রাজ্যপাল টুইট করে জানান মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলােচনা অত্যন্ত সন্তোষজনক হয়েছে। কী নিয়ে বৈঠক হয়েছে রাজভবন বা নবান্ন সে বিষয়ে সাধারণভাবে কিছু জানানাে হয়নি। তবে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনকে ঘিরে সেখানকার উপাচার্যকে শােকজ করার কঠোর পদক্ষেপ কিংবা গণপিটুনি ও এসএসটি কমিশন বিল নিয়ে মমতা-ধনকড়ের কথা হয়ে রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। 

সােমবার বেলা ১১:৫৬ মিনিট নাগাদ রাজভবনে পৌছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানাতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুদেশ ধনকড়ও। চা ও কাজুবাদাম দিয়ে অতিথি আপ্যায়নও করা হয় রাজভবন থেকে। প্রায় একঘন্টার মতাে বৈঠক হয়। 

গত সাড়ে ছ’মাসে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে রাজ্যপাল যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিংবা অন্যান্য মন্ত্রী-আমলাকে রাজভবনে ডেকেছেন, অধিকাংশ সময়েই সেই ডাকে সাড়া দেয়নি নবান্ন। সােমবারের বৈঠক সেই প্রবণতায় এক ব্যতিক্রম। বিধানসভায় রাজ্য সরকারের পাস করা বিলে স্বাক্ষর করার আগেই রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা না মেলায় সেইসব বিল আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল। এই নিয়ে শাসক দলের মন্ত্রীরা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তােপ দাগতে থাকে। রাজ্যপালের তরফেও অভিযােগ ছিল, রাজ্য সরকার প্রয়ােজনীয় তথ্য না দিয়ে অসহযােগিতা করছে। 

সম্প্রতি কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের আমন্ত্রণ পত্রে রাজ্যপালের নাম না থাকায় সেখানকার উপাচার্যকে শােকজ এমনকী বরখাস্তের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল রাজভবন থেকে। যদিও বিধানসভায় রাজ্যপাল তথা আচার্যের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য বিল এনে উপাচার্যকে বরখাস্ত করার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু রাজভবন সুত্রে জানা গিয়েছে সেই বিল এখনও আইনে পরিণত না হওয়ায় কোচবিহারের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের শােকজ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। 

সেই পরিস্থিতিতে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করলেন। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে উপাচার্যের শােকজ সংক্রান্ত জটিলতার সমাধানে মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপির রাজ্য সভাপতিও মনে করছেন আলাপ আলােচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হলে তা রাজ্যের পক্ষেই মঙ্গল।