আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনজির ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন থাকাকালীন শহিদ মিনারে গেলেন না বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। রাষ্ট্রপতি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বর থেকে ফিরে যাওয়ার পর সেখানে যান প্রধান উপদেষ্টা। অনেকেই মনে করছেন, ভাষা দিবসে এহেন আচরণ করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের প্রতি অনাস্থার বার্তা দিয়েছেন ইউনূস।
১৯৭২ সাল চলে আসা রীতি অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ভাষা শহিদদের স্মৃতিস্তম্ভ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রথম শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি। তারপর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন সরকারের প্রধান। গতবছরও এই দিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি একসঙ্গে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছিলেন। এবার ইউনূস ও রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর একসঙ্গে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। রাষ্ট্রপতি ফিরে যাওয়ার ঠিক ৭ মিনিটের মাথায় পৌঁছন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।
এখানেই শেষ নয়, কোনও উপদেষ্টা এদিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ও করেননি বলেই খবর। সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান সহ তিন বাহিনীর রাষ্ট্রপতির দিকে এগিয়ে যাননি। শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো পর মাথা নীচু করে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে উঠে বঙ্গভবনে ফিরে যান তিনি।
একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাষ্ট্রপতিকে এদিনে স্বাগত জানান। সরকার এবং প্রশাসনের কাউকেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতে দেখা যায়নি। বাংলাদেশ সরকারের নিউজ এজেন্সি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা আবার একুশের বেদিমূলে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের ছবি প্রকাশ করেনি। প্রথম কেবলমাত্র ইউনূসের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের ছবি এবং খবর ছাপা হয়েছে।
এদিকে এবার রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ নামে একটি সংগঠন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বর অবরোধ করেছিল। তাঁদের দাবি ছিল, রাষ্ট্রপতিকে এই বছর তারা পুস্পস্তবক দিতে দেবেন না। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু আওয়ামি লিগ সরকারের নির্বাচিত হওয়ায় ভাষা দিবসে শহিদ মিনারে তাঁকে না যাওয়ার নির্দেশই দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির এহেন আচরণে ইউনূস সরকারে উপদেষ্টারা ক্ষুব্ধ বলে মনে করা হচ্ছে।