• facebook
  • twitter
Thursday, 21 August, 2025

অভিবাসীদের আটকের প্রতিবাদে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন ট্রাম্পের

ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারি ও আটকের প্রতিবাদে বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন চলছে লস অ্যাঞ্জেলেসে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে লস অ্যাঞ্জেলেসে তুমুল বিক্ষোভ। ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারি ও আটকের প্রতিবাদে বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন চলছে লস অ্যাঞ্জেলেসে। শনিবার সেই আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বেড়ে যায়। প্যারামাউন্ট এলাকায় ফেডেরাল এজেন্টদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে দু’হাজার সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডিএইচএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘শুক্রবার প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী ফেডেরাল ভবন ঘিরে ফেলে আইসিই কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালায়। এর পাশাপাশি টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়, গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি সম্পত্তিও নষ্ট করা হয়।’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘যদি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসোম ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে না পারলে সমস্যা সমাধানে ফেডেরাল সরকার হস্তক্ষেপ করবে। দাঙ্গাবাজ ও ছিনতাইকারীদের আটকাতে হবে।’

আমেরিকায় অবৈধ ভাবে বসবাসকারী ভিনদেশের নাগরিকদের চিহ্নিত করতে পদক্ষেপ শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। লস অ্যাঞ্জেলেস-সহ ক্যালিফর্নিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে মার্কিন অভিবাসন এবং শুল্ক দপ্তরের (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বা আইসিই) আধিকারিকেরা হানা দিয়েছেন। শুক্রবার থেকে এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নথিহীন অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পাল্টা ন্যাশনাল গার্ড নামিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে টহলদারি চালাচ্ছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। পাঠানো হচ্ছে অতিরিক্ত বাহিনীও।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০০০ ন্যাশনাল গার্ডসম্যান (সেনা) মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে নির্বাচনের প্রচারেই ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবেন। আমেরিকায় অনুপ্রবেশ বরদাস্ত করা হবে না। অনুপ্রবেশকারীরা যদি নিজেদের দেশে ফিরে না যান, তা হলে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল ট্রাম্প সরকার।

ট্রাম্পের ঘোষণা মতো ধরপাকড় শুরু হতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। লস অ্যাঞ্জেলেসে যেহেতু সব থেকে বেশি সংখ্যক অভিবাসীরা থাকেন, ফলে অশান্তির আগুন জ্বলে ওঠে শহরে। শনিবারও প্যারামাউন্টে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। ছোঁড়া হয় টিয়ার গ্যাস। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরাও ভাঙচুর শুরু করে। একাধিক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। বিভিন্ন দোকানে চলে অবাধ লুঠপাট।

এদিকে শনিবার ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারের সামনে জড়ো হন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। দাবি, ধৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের দাবি, তাঁদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়ে বিক্ষোভকারীরা। ডিটেনশন সেন্টারেও ঢোকার চেষ্টা করেন অনেকে। অবশেষে গ্যাস মাস্ক পরা ফেডেরালের নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।