রাশিয়ার তেল কিনতে পারবে একমাত্র হাঙ্গেরি, ইউরোপের বাকি দেশ কিনলেই ‘শাস্তি’

রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে খড়্গহস্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিভিন্ন দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন তিনি। রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করা নিয়ে নানাভাবে ভারতের উপর চাপ সৃষ্ট করে চলেছেন তিনি।

এবার রাশিয়ার তেল কেনার নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।  শুধু মাত্র ইউরোপের একটি দেশকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রেখেছেন তিনি। অন্য কোনও দেশ তেল কিনলেই তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের। স্থানীয় সময় অনুযায়ী শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে এ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার তেল ইউরোপের একমাত্র দেশ হাঙ্গেরি কিনতে পারবে। অন্য কোনও দেশ কিনলেই কপালে জুটবে ‘শাস্তি’।

Advertisement

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনও দেশ থেকে তেল বা গ্যাস কেনা হাঙ্গেরির পক্ষে খুব কঠিন। তাই বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে ওদের ছাড় দেওয়া হবে।’উল্লেখ্য, ইউরোপের একেবারে মধ্য ভাগে অবস্থিত হাঙ্গেরি।

দেশের চারিদিকে কোনও সমুদ্র নেই। অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, ইউক্রেন, রোমানিয়া, স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া এবং সার্বিয়া দ্বারা পরিবেষ্টিত দেশ হল হাঙ্গেরি। খনিজ তেলের একমাত্র ভরসা রাশিয়া। প্রধানমন্ত্রী অরবান এই যুক্তিতেই ট্রাম্পকে রাজি করিয়েছেন। আবার একই যুক্তিতে মস্কোকেও সন্তুষ্ট রেখে চলেছে হাঙ্গেরি। এটি অরবানের রাজনীতির অন্যতম কৌশল। আগামী বছরে হাঙ্গেরিতে ভোট রয়েছে। ভোটারদের সস্তায় রাশিয়ার তেলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান।

রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের বয়স প্রায় চার বছর। রাশিয়া তেলের ব্যবসা চালিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করছে বলে দাবি আমেরিকার। তাই রাশিয়ার তেলের ব্যবসা বন্ধ করতে পারলেই কেল্লাফতে। তখন যুদ্ধ থামাতে বাধ্য হবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই ভারতের পাশাপাশি রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপরেও ক্ষুব্ধ ট্রাম্প। কারণ ইউরোপের বহু দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে চলেছে।

রাশিয়ার বৃহত্তম দু’টি খনিজ তেল সংস্থাকে গত মাসে নিষিদ্ধ করেছে আমেরিকা। এই দুই সংস্থার কাছ থেকে কোনও দেশ তেল কিনলে তাদের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে একমাত্র হাঙ্গেরিকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হল। অরবানের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘পুতিনকে বোঝেন অরবান, ওঁকে খুব ভাল করে চেনেন। তিনিও মনে করছেন, যুদ্ধ শীঘ্র শেষ হবে।’