জল্পনার অবসান। কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মার্ক কার্নি। প্রধানমন্ত্রী পদের লড়াইয়ে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে ৮৬ শতাংশ ভোটে পরাজিত করেন লিবারাল পার্টির নেতা ৫৯ বছরের কার্নি। তাঁর নাম ঘোষণা করেন লিবারাল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা। টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানান জাস্টিন ট্রুডো। ট্রুডোর আমলে ভারতের সঙ্গে কানাডার কূটনৈতিক বিবাদ চরমে পৌঁছেছিল। নতুন প্রধানমন্ত্রী আসার পর পরিস্থিতির বদল হয় কিনা এখন সেটাই দেখার।
রাজনীতিতে কার্যত নবাগত মার্ক কার্নি। ব্যাঙ্ক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন কার্নি। এছাড়া তিনি ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। রবিবার সদস্যদের ভোটে লিবারাল পার্টির নতুন নেতা বাছাই হয়। এতে মার্ক কার্নি ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ড পেয়েছেন ১১ হাজার ১৩৪ ভোট। বাকি প্রার্থীদের মধ্যে কারিনা গোল্ড পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৮৫ ভোট এবং ফ্রাঙ্ক বেলিস পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৮ ভোট। নির্বাচনের আগে পর্যন্ত কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন কার্নি। তাঁর বার্তা, নতুন সরকার শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।
কানাডায় এই প্রথম কোনও অরাজনৈতিক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হবেন। রাজনীতি না করলেও তিনি যে অভিজ্ঞ, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। কার্নি জানান, দুটি জি-৭ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসাবে কাজ করেছেন। তাই তাঁর অভিজ্ঞতা ট্রাম্পের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য উপযুক্ত। আমেরিকায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন কার্নি। ২০১০ সালে, টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে বিশ্বের ২৫ জন প্রভাবশালী নেতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে। ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের সময় কানাডাকে বিপর্যয় এড়াতে সাহায্য করেছিলেন তিনি।
বিদায়ী ভাষণে ট্রুডো আবেগঘন হয়ে বলেন, কোনও ভুল করলে চলবে না। এটা দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। বর্তমানে কানাডিয়ানরা প্রতিবেশী দেশের কাছে অস্তিস্ত্বের সঙ্কটে রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সমস্যা, আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। আমায় ভুল বুঝবেন না, আমি বিগত ৯ বছরে যা করেছি, সবটাই দেশের জন্য। প্রসঙ্গত, গত এক বছর ধরে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা তলানিতে এসে ঠেকেছিল। তাঁর দল লিবারাল পার্টির অন্দর থেকেও ইস্তফার দাবি জোরাল হয়ে ওঠে। পরিস্থিতির চাপে ট্রুডো জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।
কার্নি জানিয়েছেন, আমেরিকা থেকে হুমকি এলে তার মোকাবিলা করতে নতুন পরিকল্পনা প্রয়োজন। অন্যত্র নতুন বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করবেন বলেও জানিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি। মসনদে বসেই কানাডার প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, আমেরিকানরা যত দিন না আমাদের সম্মান করছে, তত দিন পারস্পরিক শুল্ক থাকবে।