ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা হাড়, পেশি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও আমরা প্রধানত সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি সংগ্রহ করি, তবে কিছু নির্দিষ্ট খাবার থেকেও এটি শরীরে প্রবেশ করে। আধুনিক ব্যস্ত জীবনযাপন, ঘরের অভ্যন্তরে দীর্ঘ সময় থাকা, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাব এবং দূষণের কারণে সূর্যের আলো কম পাওয়া – এইসব কারণে অনেকেই অজান্তেই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছেন। এই ঘাটতির প্রভাব অনেকসময় শরীরের নির্দিষ্ট কিছু অংশ, বিশেষ করে ত্বক ও পায়ের মাধ্যমে প্রকাশ পেতে শুরু করে।
পায়ের ওপর এই ঘাটতির সরাসরি প্রভাব পড়ে হাড় ও পেশির দুর্বলতার মাধ্যমে। পায়ের পাতায় ব্যথা, বিশেষ করে গোড়ালিতে জ্বালাভাব কিংবা পেশিতে টান ধরা – এই উপসর্গগুলির পেছনে কারণ হতে পারে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। কখনও কখনও হঠাৎ হাঁটার সময় ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও দেখা যায়, বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে। এটি শুধু পেশির দুর্বলতার ইঙ্গিত নয়, বরং স্নায়ু সিস্টেমে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির প্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
Advertisement
অন্যদিকে, ত্বকের ক্ষেত্রেও এই ঘাটতি নানাভাবে প্রকাশ পায়। ভিটামিন ডি ত্বকের কোষ পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয়। এর অভাবে ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। অনেক সময় ত্বকে ফুসকুড়ি বা অ্যালার্জির মতো র্যাশ দেখা দেয়, এমনকি ঘন ঘন স্কিন ইনফেকশন ও চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সবই ভিটামিন ডি-এর অভাবের কারণেও হতে পারে।
Advertisement
এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় কিছু সহজ পরিবর্তন আনা জরুরি। সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে অন্তত ২০-৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে ত্বক খোলা রেখে থাকা দরকার। পাশাপাশি ডিমের কুসুম, সামুদ্রিক মাছ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যায়। সেই সঙ্গে হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য রক্ষায় হালকা ব্যায়াম অপরিহার্য।
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি অনেকসময় ধীরে ধীরে শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ তৈরি করে। বিশেষ করে পা ও ত্বকের পরিবর্তনকে অবহেলা না করে, দ্রুত সচেতন হওয়া ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। কারণ, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগই হতে পারে এর সবচেয়ে কার্যকর ও উপযোগী সমাধান।
Advertisement



