রবিবার ত্রিদেশীয় সফরের উদ্দেশে রওনা হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর মোদীর এটাই প্রথম বিদেশ সফর। সফরের প্রথমেই তিনি যাবেন কানাডায়। ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাস হয়ে কানাডায় পৌঁছবেন তিনি। বুধবার পর্যন্ত সেখানে থাকবেন তিনি। কানাডায় জি-৭ বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। ভারত এবং কানাডার সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েনের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর পর সেখান থেকে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপীয় রাষ্ট্র ক্রোয়েশিয়ায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
প্রসঙ্গত বিশ্বের সাত উন্নত অর্থনীতির দেশের অক্ষ হল জি-৭। যদিও ভারত জি-৭ জোটের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়। তা সত্ত্বেও ২০২০ সাল বাদে গত পাঁচ বছর ধরে জি৭ সম্মেলনে আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে উপস্থিত থেকেছে ভারত। প্রথা মাফিক, জি-৭ জোটের বাইরে থাকা কোনও দেশকেও বৈঠকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাতে পারে আয়োজক দেশ। তবে এ বার জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন কানাডায় আয়োজিত হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে মোদী ওই বৈঠকে থাকবেন কি না, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত জি-৭ বৈঠকে যোগ দিতে কানাডার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মোদী।
সোমবার সাইপ্রাস থেকেই কানাডার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, কানাডায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। এই সম্মেলনকে বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে মত বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ বলে মনে করছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, একই সঙ্গে দক্ষিণ গোলার্ধের উন্নয়নশীল এবং স্বল্প উন্নত দেশগুলি অর্থাৎ ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর অগ্রাধিকারের বিষয়গুলিকেও বিস্তারিতভাবে আলোচনার সুযোগ মিলবে। মোদী তাঁর পোস্টে কানাডা সফর সংক্রান্ত বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নকেও ট্যাগ করেছেন।
রবিবার বিদেশ সফর শুরুর সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছেন, সাইপ্রাস, কানাডা এবং ক্রোয়েশিয়া সফরে তিনি আগামী কয়েকদিনে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। সাইপ্রাসে পৌঁছে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টোডোলিডেসের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া অন্য বিশিষ্টজনদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা রয়েছে। মোদী তাঁর সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে সাইপ্রাস এক গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী। মোদী আশাবাদী, তাঁর এই সফর ভারতের সঙ্গে সাইপ্রাসের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও মজবুত করবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কার্নের পূর্বসূরি জাস্টিন ট্রুডোর জমানায় খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদে কানাডার মদতের অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনাকে ঘিরে ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে কার্নে ক্ষমতায় এসেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক মজবুত করার বার্তা দেন।