• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

গাজ়ায় ‘ন্যূনতম’ খাবার পাঠাতে রাজি ইজরায়েল, জারি সংঘর্ষও

হামাসের সঙ্গে প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মার্চের শুরুর দিকে গাজ়ায় খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল ইজ়রায়েল।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইজরায়েলের যুদ্ধ লেগেই রয়েছে। এখনই যুদ্ধবিরতির কোনও সম্ভাবনা নেই। প্রায় প্রতিদিনই আকাশপথে ইজরায়েলি হানা চলছে গাজায়। মৃত্যু হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দাদের। এদিকে এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই গাজায় খাদ্য নিয়ে হাহাকার শুরু হয়েছে। আর খাবারের জন্য সেই হাহাকারে সায় ছিল না ‘বন্ধু’ রাষ্ট্রগুলিরই! নারী ও শিশুদের কান্নায় তারা বিব্রত। ফলে চাপের মুখে পড়েই গাজ়ায় ত্রাণ পাঠাতে বাধ্য হল ইজরায়েল। এই সত্যতা স্বীকার করে নিলেন স্বয়ং নেতানিয়াহু।

হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের অভিযান একই গতিতে চলছে। ধারাবাহিকভাবে গাজা ভূখণ্ডে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েলের বায়ুসেনা বিভাগ। যদিও কাতার, আমেরিকা ও মিশরের উদ্যোগে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইজরায়েল ও হামাস গোষ্ঠী। তবে প্রথম দফার ওই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মার্চের গোড়াতেই ফের হামলা শুরু করে ইজরায়েল।

Advertisement

প্রসঙ্গত গত ১৯ মাস ধরে চলা হামাস গোষ্ঠী ও ইজরায়েলের সংঘর্ষে ৫৩ হাজারেরও বেশি প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। এই যুদ্ধে আহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ অনুসারে, সোমবার ভোর থেকে আরও অন্তত ২৩ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যুর খবর মিলেছে। আগেরদিন রবিবার ইজরায়েলি হানায় গাজায় ফের শতাধিক মৃত্যু হয়। সংবাদ সংস্থা ‘এপি’ অনুসারে, ইজরায়েলি বায়ুসেনার হামলায় অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে রয়েছেন অন্তত ১৮টি শিশু ও ১৩জন মহিলা।

Advertisement

তবে শুধুমাত্র যুদ্ধ নয়, সেই সঙ্গে গাজ়া ভূখণ্ডে খাবার সরবরাহ বন্ধ করা-সহ বেশ কিছু অবরোধ চাপানোও শুরু করে ইজরায়েল। অমানবিক ওই সিদ্ধান্তগুলি প্রত্যাহারের জন্য ইজ়রায়েলের উপর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মঞ্চ থেকে চাপ আসছিল। আর সেজন্যই গাজ়ায় সীমিত পরিমাণে খাবার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইজরায়েলের প্রশাসন।

হামাসের সঙ্গে প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মার্চের শুরুর দিকে গাজায় খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল ইজরায়েল। তা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তর থেকে যে প্রশ্ন উঠছিল, তা সোমবার ‘স্বীকার’ করে নিয়েছেন নেতানিয়াহু। এদিন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী একটি ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ইজরায়েলের বন্ধুরাষ্ট্রগুলি (গাজ়ায়) ‘ক্ষুধার চিত্র’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। এই পরিস্থিতিতে তারা ইজরায়েলকে সমর্থন করতে পারবে না, এমন কথাও জানিয়েছিল ওই দেশগুলি। আন্তর্জাতিক চাপের মুখেই হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত বদল করতে হয়েছে ইজরায়েলকে। তিনি বলেছেন, “জয়ের জন্য আমাদের কোনও একটি সমাধানের পথ বের করতে হত।”

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, গাজা ভূখণ্ডে যাতে কোনও দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই গাজাবাসীর জন্য ন্যূনতম পরিমাণ খাবার পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হবে। হামাস-বিরোধী সামরিক অভিযান আরও সম্প্রসারিত করতে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সুপারিশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement