• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

মার্কিন দেশ থেকে ফের বহিষ্কৃত অবৈধ অভিবাসী ভারতীয়রা

বিমানে ২৫ ঘন্টা ধরে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ

বৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে ফের পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। একটি বিশেষ বিমানে আবার ৫৪ ভারতীয় নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।  একটি বিশেষ বিমানে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়। আবার মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগ করেছেন দেশে ফেরা ভারতীয়রা।  অবৈধ অভিবাসীদের এই সর্বশেষ দলে হরিয়ানার কৈথাল, কর্ণাল, কুরুক্ষেত্র, আম্বালা, যমুনানগর, জিন্দ এবং পানিপথ জেলার ৫৪ জন ছিলেন। শনিবার গভীর রাতে তাদের নিয়ে বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ফেরত পাঠানো ভারতীয়রা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় তথাকথিত ‘ডাঙ্কি রুট’ ব্যবহার করেছিলেন।  

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসা ৫৪ জনের মধ্যে ১৬ জন কর্ণাল জেলার, ১৫ জন কৈথালের, ৫ জন আম্বালার, ৪ জন যমুনানগরের, ৪ জন কুরুক্ষেত্রের, ৩ জন জিন্দের, ২ জন সোনিপাতের এবং ১ জন করে পঞ্চকুলা, পানিপথ, রোহতক ও ফতেহাবাদ জেলার বাসিন্দা।

কর্ণাল জেলার ডিএসপি সন্দীপ কুমার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও কয়েকজন ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ৫০ জন হরিয়ানার বাসিন্দা। এই ব্যক্তিরা ডাঙ্কি রুট ব্যবহার করে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন। আমরা তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি।’ তিনি আরও জানান, কোনও এজেন্টের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবে তদন্ত চলছে। কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন কি না, তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।

Advertisement

শনিবার রাতে ওই ভারতীয়দের নিয়ে দিল্লি বিমানবন্দরে নামে মার্কিন দেশের বিশেষ বিমান। সেখানে ছিলেন বছর ৪৫-এর হরজিন্দর সিং। তিনি হরিয়ানার আম্বালার জাগোলি গ্রামের বাসিন্দা। ভারতের ফিরে এবার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনান  এই ভারতীয়। তিনি বলেন, ‘আমার পা ফুলে গেছে। আমাকে (বিমানে) ২৫ ঘন্টা ধরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল।’

 নিজের কষ্টের কথা প্রকাশ করে সিং আরও বলেন যে, উন্নত জীবনের জন্য তিনি ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ করে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের জন্য ভালো কিছু করার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নরেশ কুমার নামে অপর এক যুবক বলেন, ‘এক এজেন্টের মাধ্যমে আমেরিকায় পৌঁছেছিলাম। প্রথমে ৪২ লক্ষ টাকা বললেও পরে তিনি আমার থেকে মোট ৫৭ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। জমি বিক্রি করে সেই টাকা বেশিরভাগ টাকা দিয়েছিলাম। দেশে ফেরানোর আগে আমাকে ১৪ মাস জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছিল।’ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ফেরত আসা ব্যক্তিদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

এই বছরের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে। এতে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনা বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনে বলা হয়েছে, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া দেশে অবস্থানকারীরা বা অভিবাসন আইন লঙ্ঘনকারীরা সবাইকে নিজের নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এই বছরের শুরুতে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং গুজরাত থেকে বহু অবৈধ অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠায়।

Advertisement