• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

‘চৈনিক চাল’ উল্টে দিতে গ্লোবাল সাউথের তাস! তিয়ানজিনে মোদি-পুতিন-কিম বৈঠকে কোণঠাসা ট্রাম্প

হোয়াইট হাউসের নীতি যে এশিয়ার অনেক দেশের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে, তা স্পষ্ট। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার উপর কড়া শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা।

জাপান সফর সেরে চিনে পৌঁছে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাংহাই সহযোগিতা পরিষদের (এসসিও) ২৫তম সম্মেলনে যোগ দিতেই শনিবার তিয়ানজিনে অবতরণ করেছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিমান। তবে এই সফর কেবলমাত্র কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতির অঙ্কেও বড়সড় মোড় ঘোরানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এই সম্মেলনেই একই মঞ্চে বসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান, ইরানের প্রেসিডেন্ট মসউদ পেজেস্কিয়ান এবং উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জন উন। আগামী ৩১ অগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই সম্মেলন।

মূলত সন্ত্রাস, চরমপন্থা আর বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার উদ্দেশ্যেই ১০টি সদস্য দেশ নিয়ে তৈরি হয়েছিল এসসিও। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মঞ্চ হয়ে উঠেছে গ্লোবাল সাউথের শক্তি প্রদর্শনের জায়গা। ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞার খামখেয়ালি আর বাণিজ্যে মার্কিন দাদাগিরির জবাব দিতে এশিয়ার এই সম্মেলনকেই কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে ভারত, চিন, রাশিয়া-সহ একাধিক দেশ।

Advertisement

হোয়াইট হাউসের নীতি যে এশিয়ার অনেক দেশের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে, তা স্পষ্ট। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার উপর কড়া শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। সেই সঙ্গে রুশ তেল কেনায় ভারতের উপরও নেমেছে শুল্কের খাঁড়া— ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে আমদানি শুল্ক। চিনকেও বিরল খনিজ রপ্তানির ক্ষেত্রে হুমকি দিয়েছে ২০০ শতাংশ শুল্কের। ফলে বাণিজ্য ও কূটনীতির অঙ্গনে মার্কিন আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য একজোট হওয়ার পথে হাঁটছে এশিয়ার প্রভাবশালী দেশগুলি।

Advertisement

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গালওয়ান সংঘাতের পর মোদির এই প্রথম চিন সফর এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষত, যখন ভারতের উপর ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ ক্রমশ বাড়ছে, তখন বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত দিচ্ছে নয়াদিল্লি। মোদি-পুতিন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও এই সফরের অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারত-চিন-রাশিয়ার এই ঘনিষ্ঠতা ভবিষ্যতে মার্কিন কৌশলকে বড় ধাক্কা দিতে পারে।

তিয়ানজিন সম্মেলন থেকে গ্লোবাল সাউথের ঐক্যের যে বার্তা উঠবে, তা যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কূটনীতির অঙ্কে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে, তা এখনই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘এই বৈঠক শুধু কূটনৈতিক সৌজন্যের জায়গা নয়, বরং এখান থেকেই বিশ্ব রাজনীতির এক বড়সড় পালাবদলের সূচনা হতে চলেছে।’

Advertisement