• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

তিয়ানজিনে মোদি-জিনপিং বৈঠক, সীমান্তে শান্তির আবহে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার বার্তা

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দুই দেশের প্রায় ২৮০ কোটি মানুষের স্বার্থ এই সম্পর্কের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁর কথায়, ‘এ সহযোগিতা মানবকল্যাণের নতুন পথ খুলে দেবে।’

তিয়ানজিনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চিনের প্রেসিডেন্ট জিংপিং।

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের আগে রবিবার চিনের বন্দরনগরী তিয়ানজিনে মুখোমুখি বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং ভবিষ্যতের সহযোগিতার রূপরেখা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী মোদি বৈঠকে জানান, গত বছর কাজানে বৈঠকের পর ভারত-চিন সম্পর্ক নতুন দিশা পেয়েছে। মোদির কথায়, ‘গত বছর কাজানে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছিল, যা সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক দিকনির্দেশনা দিয়েছে। সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশেষ প্রতিনিধিদের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা আবার শুরু হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবাও চালু হচ্ছে।’

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দুই দেশের প্রায় ২৮০ কোটি মানুষের স্বার্থ এই সম্পর্কের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁর কথায়, ‘এ সহযোগিতা মানবকল্যাণের নতুন পথ খুলে দেবে। পারস্পরিক বিশ্বাস, সম্মান আর সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

Advertisement

বৈঠকে শি জিনপিংও একই সুরে বলেন, ভারত-চিনের বন্ধুত্বই দুই দেশের জন্য সঠিক পথ। তাঁর কথায়, ‘দুই দেশ মিলে নিজেদের নাগরিকদের উন্নত জীবনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলির ঐক্য এবং মানবসমাজের অগ্রগতির জন্য একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। ড্রাগন আর হাতির মিলনই সঠিক সিদ্ধান্ত।’

দশ মাস পর এই প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ করলেন দুই নেতা। শেষবার তাঁদের বৈঠক হয়েছিল রাশিয়ার কাজানে, ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে। বিশ্লেষকদের মতে, সেই সাক্ষাতের পর থেকেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উন্নতির ইঙ্গিত মিলছিল। দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস এবং ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষে সম্পর্কের অবনতি হলেও, এ বার ফের সম্পর্ক উষ্ণ করার পথে হাঁটছে দুই দেশ।

এই বৈঠকের কূটনৈতিক গুরুত্বও যথেষ্ট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ভারত ও চিনের এই ঘনিষ্ঠতা নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এ সপ্তাহেই শুরু হতে চলা এসসিও সম্মেলন হবে সংস্থার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আয়োজন। মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় ২০ জন বিশ্বনেতা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্মেলনকে সামনে রেখে গ্লোবাল সাউথের ঐক্য এবং আমেরিকা-ইউরোপকেন্দ্রিক প্রভাবের বাইরে একটি বহুমুখী বিশ্বের দিশা দেখানোর চেষ্টা করছে চিন, যেখানে ভারত, চিন এবং রাশিয়া হয়ে উঠতে পারে মূল চালিকাশক্তি।

Advertisement