• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকের প্রেক্ষাপটে গুরুত্ব বাড়ছে ভারতের

আলোচনার ঠিক আগে এক বিস্ফোরক দাবি করে ট্রাম্প বলেন, ভারতের উপর চড়া শুল্ক চাপানোর কৌশলই পুতিনকে আলোচনায় রাজি করাতে সাহায্য করেছে।

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যেই আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলোচনার ঠিক আগে এক বিস্ফোরক দাবি করে ট্রাম্প বলেন, ভারতের উপর চড়া শুল্ক চাপানোর কৌশলই পুতিনকে আলোচনায় রাজি করাতে সাহায্য করেছে।

শুক্রবার, ভারতীয় সময় অনুযায়ী গভীর রাতে আলাস্কায় এই বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। তার আগে আমেরিকার জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ রেডিও’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘সব কিছুরই একটা প্রভাব থাকে। আমি বিশ্বাস করি, ভারতের উপর শুল্ক চাপানোর ফলেই পুতিন আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন।’ তাঁর দাবি, ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনা থেকে বিরত রাখতে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

Advertisement

যদিও নয়াদিল্লি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করার কোনও ঘোষণা করেনি। বরং সরকারি সূত্রে বারবার জানানো হয়েছে, দেশের শক্তি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি চালু থাকবে। প্রসঙ্গত, রাশিয়া থেকে তেল আমদানির দিক দিয়ে ভারত এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা দেশ।

Advertisement

ট্রাম্পের আরও দাবি, চিন এবং ভারত – এই দুই দেশই রাশিয়ার প্রধান তেল ক্রেতা। ভারতের উপর শুল্ক চাপিয়ে তিনি পুতিনকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, এই লভ্যাংশ ইউক্রেন যুদ্ধ চালাতে ব্যবহার করা চলবে না। তাঁর কথায়, ‘যখন কেউ নিজের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতাকে হারায়, তখন সবচেয়ে বড় ক্রেতার ভবিষ্যৎ নিয়েও দুশ্চিন্তা তৈরি হয়। সম্ভবত সেটাই পুতিনকে আলোচনায় রাজি করিয়েছে।’

এই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ভারতের কাছেও কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি, আমদানি ব্যয় এবং ভৌগোলিক কৌশলগত ভারসাম্য – সব কিছুর উপরই প্রভাব ফেলেছে। নয়াদিল্লির বক্তব্য, আলোচনার মাধ্যমে যদি রুশ-ইউক্রেন সংঘর্ষের কোনও মীমাংসা হয়, তবে তা বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি ভারতের পক্ষেও ইতিবাচক হবে।

আলাস্কা বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক গত সপ্তাহে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এই বৈঠক শান্তি ও স্থিতাবস্থার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে, ভারত তার পক্ষেই।’ তবে একযোগে নয়াদিল্লি এই বার্তাও দিয়েছে যে, জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে কোনওরকম আপস ভারত করবে না।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ‘ভারত আজ এক শক্তিশালী রাষ্ট্র। কোনও চাপেই আমরা মাথা নত করব না।’

বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন চাপ সামাল দিয়েও ভারতের কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করার কৌশল এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এক উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে। এখন দেখার, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে আদৌ কোনও গঠনমূলক অগ্রগতি হয় কি না এবং তা ভারতের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অবস্থানে কী প্রভাব ফেলে।

Advertisement