মধ্যপ্রদেশের বিদ্রোহী বিধায়কদের অনেকেই বিজেপিতে ভিড়তে নারাজ

ভােপালের রাজনীতিতে নাটক এখন তুঙ্গে। কংগ্রেস ছেড়ে মঙ্গলবারই বিজেপির পথে পা বাড়িয়েছিল জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।

Written by SNS New Delhi | March 12, 2020 1:34 pm

বিজেপি'তে যোগ দিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। (Image: Twitter/@BJPLive)

ভােপালের রাজনীতিতে নাটক এখন তুঙ্গে। কংগ্রেস ছেড়ে মঙ্গলবারই বিজেপির পথে পা বাড়িয়েছিল জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁর সঙ্গে ২২ জন অনুগামী কংগ্রেস বিধায়কও দল ছাড়ার কথা ঘােষণা করেন। বুধবার সিন্ধিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যােগ দিলেও তাঁর অনুগামী বিধায়কদের একাংশ বিজেপিতে যােগ দিতে অনিচ্ছুক বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। 

কংগ্রেস সভানেত্রী সােনিয়া গান্ধির কাছে জ্যোতিরাদিত্যের ইস্তফাপত্র পৌঁছনাের পর এই বিধায়করাও বেঙ্গালুরুর ডেরা থেকে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার স্পিকারের কাছে তাঁদের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। কিন্তু সর্বশেষ খবরে জানা যাচ্ছে, বিজেপিতে যােগদানের ব্যাপারে তাদের বেশির ভাগই রাজি নন। এই ঘটনায় উজ্জীবিত হয়ে কমলনাথ সরকারও ময়দানে নেমে পড়েছে। তাঁরা বিজেপির গ্রাস থেকে বিদ্রোহী বিধায়কদের ছিনিয়ে আনার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। সাবধানতা হিসেবে কংগ্রেস তার ৯৫ জন বিধায়ককে জয়পুরে সরিয়ে নিয়ে গেছে। 

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর কংগ্রেস সভানেত্রী সােনিয়া গান্ধির কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। এরপরই কমল নাথ সরকারের ছয় মন্ত্রী সমেত ২২ জন বিদ্রোহী বিধায়ক স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। তারপরই অন্য নাটক শুরু হয়। সিন্ধিয়া এদিন বিজেপিতে যােগ দিলেও বিদ্রোহী বিধায়কদের একাংশ বিজেপিতে যােগদানের ব্যাপারে বেঁকে বসেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে দলে ফিরিয়ে আনার জন্য কংগ্রেস নেতা সজ্জন সিং ভার্মা ও গােবিন্দ সিং বেঙ্গালুরু চলে যান। 

তাঁদের কথায়, বিদ্রোহী বিধায়কদের মনােভাবের পরিবর্তন ঘটেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাদের ধারণা ছিল জ্যোতিরাদিত্য হয়তাে নতুন দল গঠন করবেন। কিন্তু সিন্ধিয়া তা না করে বিজেপি’তে ঢুকে পড়ায় তাঁদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ১০-১২ জন সিন্ধিয়ার পথ অনুসরণ করে বিজেপিতে যােগ দিতে অস্বীকার করেছে বলে খবর। 

সিন্ধিয়ার অনুগামী ২২ জন বিদ্রোহী বিধায়ককে বেঙ্গালুরুর একটি হােটেলে রেখে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ মধ্যপ্রদেশের শাসক কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে যােগাযােগ রাখছেন বলে খবর। কংগ্রেস সুত্র থেকে জানানাে হয়েছে, চারজন নির্দল বিধায়ক তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন। যাঁরা বিদ্রোহী হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ এখন কংগ্রেসের সঙ্গে যােগাযােগ করছেন। তাঁরা বুঝেছেন একজনের উচ্চাকাঙক্ষার জন্য তাঁদের ভবিষ্যৎ সংকটের মধ্যে পড়েছে। বিধানসভায় আস্থা ভোট হলে কমলনাথ সরকার সহজেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে পারবে বলে কংগ্রেস সুত্রের দাবি। জ্যোতিরাদিত্য বিজেপি শিবিরে চলে গেলেও তাঁর অনুগামী বিধায়কদের একাংশের মনােভাব পরিবর্তনের ফলে আশার সঞ্চার হয়েছে কংগ্রেস শিবিরে। 

মধ্যপ্রদেশে ২৩০ আসনের বিধানসভায় বর্তমানে বিধায়ক রয়েছে ২২৮ জন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১১৫ জন বিধায়কে সমর্থন প্রয়ােজন। বহুজন সমাজ পার্টির দু’জন, সমাজবাদী পার্টির একজন এবং চারজন বিধায়কের সমর্থনের জোরে এতদিন কংগ্রেসের দখলে ছিল ১২১টি আসন। ২২ জন বিদ্রোহী বিধায়ক পদত্যাগ করায় কংগ্রেস সমর্থক বিধায়কের সংখ্যা ৯৯-তে নেমে এসেছে। এই অবস্থায় বিধানসভার ম্যাজিক সংখ্যা ১০৪-এ এসে দাঁড়াচ্ছে। যেহেতু বিজেপি’র বিধায়ক সংখ্যা ১০৭, তাই আস্থা ভােট হলে তাদের জয়লাভে বাধা থাকার কথা নয়। কিন্তু এখন আবার যেসব নাটকীয় পরিবর্তনের কথা শােনা যাচ্ছে তাতে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা কল্পনার বিষয়।