হাওড়ায় গাছ পড়ে দুই পুরকর্মীর মৃত্যুর ঘটনার রেশ কাটেনি এখনও। আর সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সতর্ক হচ্ছে কলকাতা পুরসভা। বর্ষা আসতেই শহরের রাস্তাঘাট, পার্ক ও জনবহুল এলাকায় যেসব বড় গাছ রয়েছে, সেগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করছে পুরসভা। লক্ষ্য একটাই, শহরবাসীর নিরাপত্তা।
কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ এবং প্রতিটি বরোর আধিকারিকদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নিজ নিজ এলাকার সমস্ত গাছ খতিয়ে দেখতে হবে। কোন গাছ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, কোথাও গাছ হেলে পড়ছে কি না, কোনো ডাল ঝুলে আছে কি না বা ভেতরে পোকামাকড় ধরে গাছ দুর্বল হয়ে পড়েছে কি না— সবটাই নজরে রাখতে হবে।
শুধু রাস্তার গাছ নয়, কেএমডিএ-এর অধীনে থাকা রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরের মতো জনপ্রিয় পার্কগুলির দিকেও কড়া নজর দিতে বলা হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ প্রাতঃভ্রমণে কিংবা বিকেলে সময় কাটাতে যান এই সব জায়গায়। সেখানে একটি গাছও যদি দুর্বল হয়, তা ভয়ানক বিপদের কারণ হতে পারে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে এই বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘বাইরে থেকে গাছ দেখতে শক্তপোক্ত মনে হলেও ভেতরে পচন ধরতে পারে। আর সেটা বুঝতে না পারলে, যেকোনও মুহূর্তে সেই গাছ পড়ে গিয়ে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে। তাই এখন থেকেই সাবধান হতে হবে।’
শুধু বিপজ্জনক গাছ নয়, শহরের সৌন্দর্য রক্ষায়ও গুরুত্ব দিচ্ছে পুরসভা। মেয়র জানিয়েছেন, অনেক গাছের ডালপালা রাস্তার দিকে অতিরিক্ত ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়। সেই কারণে সমস্ত গাছকে পরিমিত ও সুন্দরভাবে ছাঁটার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এতে শহর যেমন সুন্দর দেখাবে, তেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কাও কমবে।
পুরসভা এবং কেএমডিএ-এর আধিকারিকদের নিয়ে যৌথভাবে একটি পরিদর্শনকারী দল গঠন করার প্রস্তাবও দিয়েছেন মেয়র। এই দল রাস্তায় ঘুরে ঘুরে প্রতিটি গাছ পরীক্ষা করবে। কোথাও সামান্য সন্দেহ হলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে বর্ষা শুরুর আগেই শহরজুড়ে গাছ নিয়ে শুরু হয়েছে এক বৃহৎ সচেতনতা অভিযান।