ওপিটি বাতিল সংক্রান্ত এই প্রস্তাব এখনও বিল আকারেই আছে, আইন হিসাবে পাস হয়নি। তবে বিষয়টি ইতিমধ্যেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে। শিক্ষা, অভিবাসন ও কূটনৈতিক স্তরে বিষয়টি কীভাবে এগোয় তার ওপরই নির্ভর করছে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর স্বপ্ন।
আমেরিকায় ভারতীয় পড়ুয়াদের অধিকাংশই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অঙ্কের মতো বিষয় নিয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য যান। এতদিন শিক্ষার শেষে সে দেশে অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং তথা ওপিটি-র কাজে যোগ দিতে পারতেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পাওয়া এই সুযোগে স্নাতক হওয়ার পর সর্বোচ্চ ৩ বছর আমেরিকায় বসবাসের সুযোগ পেতেন তাঁরা।
কিন্তু, এবারের এই আইনে হাজার হাজার বিদেশি পড়ুয়ার ভাগ্যে নেমে আসতে পারে বজ্রাঘাত। কারণ, ওপিটি করার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক চাকরিপ্রার্থীই প্রত্যাশা করতেন বা মনে মনে স্বপ্ন দেখতেন, সাময়িক কাজের স্বীকৃতিই দীর্ঘমেয়াদি কর্মীর ভিসাতে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারে।
ওপেন ডোরস ২০২৪ শীর্ষক একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আমেরিকায় পড়তে যাওয়া বিদেশি পড়ুয়াদের মধ্যে ভারতীয়রাই শীর্ষ রয়েছে। আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেড়ে যা হয়েছিল ৩ লক্ষ৩১ হাজার ৬০২ জন। এর মধ্যে ৯৭ হাজার ৫৫৬ জন ওপিটি বেছে নিয়েছিলেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে, এর আগেও একবার ওপিটির সুযোগ তুলে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। কিন্তু, বর্তমান প্রশাসনের অধীনে অভিবাসী-মুক্ত আমেরিকা গড়ার লক্ষ্যে এই বিল আনতে কোমর বেঁধে নেমেছে ট্রাম্প সরকার। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেই ছিল তিনি ক্ষমতায় আসলে অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে বিতাড়িত করবেন। এ বিষয়ে অভিবাসী আইন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পূর্বী চোঠানি জানান, যদি বিল পাশ হয়ে গিয়ে ওপিটি বিলুপ্ত হয়, তাহলে পড়ুয়াদের স্নাতক হওয়ার পরেই আমেরিকার মাটি ছাড়তে হতে পারে।
পূর্বী চৌঠানি আরও বলেন, অনেক শিক্ষার্থী এখন জরুরি ভিত্তিতে এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদন করছেন অথবা যুক্তরাজ্যের মতো অন্য দেশের বিকল্প খুঁজছেন, যেখানে পড়াশোনার পর কিছুদিন থাকার অনুমতি থাকে। তিনি বলেন, ওপিটি বাতিল হলে শিক্ষার্থীরা বছরে লক্ষ লক্ষ টাকার মার্কিন মজুরি হারাবে, যা ছাত্র ঋণ পরিশোধে বড় সমস্যা তৈরি করবে।