পাকিস্তানে বন্দি দশা কাটিয়ে ২২ দিনের মাথায় ভারতে পা রেখেছেন হুগলির বাসিন্দা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। এই ২২ দিন একেবারেই সহজ ছিল না তাঁর কাছে। পূর্ণমের অভিযোগ, পাকিস্তানে তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাঁকে ঘুমোতে পর্যন্ত দেওয়া হত না।
গত ১৪ মে ওয়াঘা–আটারি বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন পূর্ণম। দেশে ফিরে নিয়ম অনুযায়ী তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। ভারতে ফিরেই নিজের স্ত্রীয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন পূর্ণম। ঘরের ছেলে দেশে ফিরে আসায় স্বস্তিতে পরিবারের সদস্যরা। শীঘ্রই তিনি বাড়িতে ফিরবেন। কিন্তু তার আগে দফায় দফায় তাঁকে বিএসএফ কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সেখানেই একে একে উঠে আসছে বিভিন্ন তথ্য। পাকিস্তানে তাঁকে কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তা বিএসএফ আধিকারিকদের বিস্তারিতভাবে জানাচ্ছেন পূর্ণম।
তিনি জানিয়েছেন, সবসময় তাঁর চোখে একটি কালো কাপড় বাঁধা থাকত। সীমান্তে বিএসএফের একাধিক গোপন তথ্য পূর্ণমের থেকে আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন পাক রেঞ্জাররা। একাধিক অফিসারদের ব্যক্তিগত তথ্য ও নম্বরও আদায় করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। কারণ পূর্ণমের কাছে ফোন ছিল না। পূর্ণমকে যিনি জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন তিনি সিভিল ড্রেস পরেছিলেন।
জানা গিয়েছে, পাকিস্তানে পূর্ণমকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করা না হলেও অকথ্য গালিগালাজ করা হয়েছে। তাঁকে দাঁত ব্রাশ করতেও দেওয়া হত না। পূর্ণমকে পাকিস্তানে মোট তিনটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারমধ্যে একটি জায়গা এয়ারবেসের পাশে ছিল। বিমানের শব্দ শুনে এমনটাই অনুমান করেছিলেন তিনি। সব সময় তাঁর চোখে কাপড় বাঁধা ছিল। তাঁকে জেলেও বন্দি রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর ২৩ এপ্রিল ফিরোজপুর সেক্টরে ডিউটিরত অবস্থায় ভুল করে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে গিয়েছিলেন পূর্ণম। সেই সময় তাঁকে পাকিস্তানের রেঞ্জাররা গ্রেপ্তার করেন। এরই মধ্যে অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালায় ভারত। তারপর থেকে আরও উদ্বিগ্ন ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বারবার পরিবারকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকভাবে পূর্ণমের স্ত্রী রজনীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এই পরিস্থিতিতে পূর্ণম দেশে ফেরায় খুশি রাজ্য সহ দেশবাসী।