• facebook
  • twitter
Friday, 12 December, 2025

৬৪ শর্তের চাপে পাকিস্তান, আরও ১১ নির্দেশে বাড়াল আইএমএফ

ইতিমধ্যেই আইএমএফের কার্যনির্বাহী বোর্ড ১২০ কোটি ডলারের কিস্তি অনুমোদন করেছে

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।

আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ) পাকিস্তানের জন্য ৭০০ কোটি ডলারের বেলআউট প্যাকেজে সবুজ সংকেত দিলেও সেই অর্থ পেতে কড়া শর্ত মানতে হবে ইসলামাবাদকে। ইতিমধ্যেই আইএমএফের কার্যনির্বাহী বোর্ড ১২০ কোটি ডলারের কিস্তি অনুমোদন করেছে। তবে আগামী দেড় বছরে মোট ৬৪টি শর্ত পূরণ করলেই মিলবে বাকি অর্থ। তার মধ্যে কেবল পরবর্তী কিস্তির জন্যই নতুন করে ১১টি শর্ত চাপিয়েছে আইএমএফ। অর্থনীতির স্থিতি ফিরিয়ে আনা, রাজস্ব বৃদ্ধি, ভর্তুকি কমানো এবং বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার স্থিতিশীল করার মতো বিষয়েই মূলত চাপ বাড়িয়েছে সংস্থা। ফলে তীব্র আর্থিক সংকটের মুখে থাকা পাকিস্তানের সামনে কঠিন পথই অপেক্ষা করছে।

নতুন ১১টি শর্তের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছে আইএমএফ দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপে। শর্ত অনুযায়ী, পাকিস্তান সরকারকে উচ্চপদস্থ আমলা ও সরকারি আধিকারিকদের সম্পত্তির পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী পর্যায়ে একই নির্দেশনা যাবে প্রাদেশিক সরকারগুলির কাছেও। পাশাপাশি, দেশের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকে দুর্নীতি রোধে কী কী বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, তার একটি বিস্তারিত রোডম্যাপ জমা দিতে হবে ইসলামাবাদকে। অর্থনৈতিক স্থিতি ফেরাতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উপরে যে আইএমএফ জোর দিচ্ছে, এই শর্ত তারই স্পষ্ট ইঙ্গিত।

Advertisement

‘এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফেসিলিটি’ (ইএফএফ) এবং ‘রেসিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেনেবিলিটি ফেসিলিটি’ (আরএসএফ)-– এই দুই প্রকল্পের অধীনেই পাকিস্তানের জন্য নতুন করে অর্থছাড় করেছে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ)। ইএফএফ প্রকল্পে আরও ১০০ কোটি ডলারের কিস্তি অনুমোদন পেয়েছে ইসলামাবাদ। পাশাপাশি পরিবেশ-সহনশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতি জোরদারে আরএসএফ-এর আওতায় ২০ কোটি ডলার ঋণ মঞ্জুর করেছে সংস্থা। দুই প্রকল্প মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ৩৩০ কোটি ডলার বরাদ্দ হয়েছে পাকিস্তানের জন্য।

Advertisement

দু’ বছর আগে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের কাছ থেকে ৭০০ কোটি ডলারের বেলআউট প্যাকেজ পেয়েছিল পাকিস্তান। অতিমারির ধাক্কায় ডলারের তুলনায় পাকিস্তানি মুদ্রার দামের বড় পতন, লাগামছাড়া মুদ্রাস্ফীতি এবং তীব্র জ্বালানি ঘাটতি— সব মিলিয়ে নাজেহাল অর্থনীতিকে কিছুটা ধরতে সাহায্য করেছিল সেই সহায়তা। বিনিময়ে ইসলামাবাদকে একাধিক কাঠামোগত সংস্কার-সহ কঠোর শর্ত মানতে হয়। তবে ভারত আগেই দাবি করেছিল, পাকিস্তান সেই শর্তগুলো পুরোপুরি পালন করেনি। তবু এ বছরের মে মাসে আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য আরও ১০০ কোটি ডলারের ঋণ মঞ্জুর করে, যার বিরোধিতা জানায় দিল্লি। সে সময় আইএমএফের সাফাই ছিল— এই ঋণের ক্ষেত্রে পাকিস্তান নির্ধারিত লক্ষ্যগুলি পূরণ করেছে, তাই নতুন কিস্তি অনুমোদনে কোনও বাধা ছিল না।

Advertisement