ইয়েদুরাপ্পা সক্রিয়

দুর্নীতির অভিযােগের ভিত্তিতে একবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি। ফল হয়েছিল মারাত্মক।

Written by SNS Bnegaluru | August 9, 2021 6:04 pm

বি এস ইয়েদুরাপ্পা (File Photo: IANS)

দুর্নীতির অভিযােগের ভিত্তিতে একবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি। ফল হয়েছিল মারাত্মক। বিজেপি সেখানে একেবারে নাজেহাল অবস্থায় পড়েছিল। পরবর্তীতে বিধানসভা নির্বাচনে আর হালে পানি পায়নি, জেতা তাে দূর অস্ত।

এরপর বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাধ্য হয়েই ইয়েদুরাপ্পাকে আবার রাজ্য বিজেপির প্রধান পদে ফিরিয়ে এনে ক্ষমতা দখলে সমর্থ হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়নি। কিন্তু কংগ্রেস-জনতা দল (এস) জোট সরকারকে ভেঙে দিয়ে এক বছরের মধ্যে ইয়েদুরাপ্পা ক্ষমতা দখল করেছিল।

কিন্তু বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কর্নাটকে ইয়েদুরাপ্পার ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুব একটা যে স্বস্তিতে ছিল তা নয়, এবং ইয়েদুরাপ্পার শাসনের পদ্ধতিতেও সন্তুষ্ট ছিল না। ফলে ২০১১ সালের প্র অর্থাৎ এক দশক পার হতেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।

এবার আর ভুল না করে ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তার পছন্দ মতাে সময়ে ইস্তফা দেওয়ার তারিখ ঠিক করা এবং উত্তরসূরী বাছাইয়ের সুযােগ দিয়েছিল। ফলে ইয়েদুরাপ্পার বয়স পঁচাত্তর হয়েছিল এটা একটা অজুহাত মাত্র ছিল। মাত্র কয়েকদিন আগেই বিজেপি উননব্বই বছরের শ্ৰীধরনকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রচার করে নির্বাচনে লড়াই করেছে।

এদিকে উত্তরসূরী হিসেবে ইয়েদুরাপ্পা যে বাসবরাজ বােমাইয়ের নাম প্রস্তাব করেন তাতে বিজেপির সকল স্তরের নেতা কর্মীরাই খুশি হয়েছেন। ইয়েদুরাপ্পা মুখ্যমন্ত্রীর পদে দুই বছর পূর্ণ করে ২৬ জুলাই পদত্যাগ করেন। এদিকে বােমাই ২৮ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ।

কিন্তু তিনি এখনও তাঁর মন্ত্রিমন্ডলী গঠন করতে পারেননি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মতপার্থক্যের জন্য। চার আগস্ট ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের নাম ঘােষণা করা সত্ত্বেও এখনও দফতর বন্টন করা হয়ে ওঠেনি। ইয়েদুরাপ্পা তার পুত্র বি ওয়াই বিজয়েন্দ্রকে উপমুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তা গ্রাহ্য করা হয়নি।

তবে বিজয়েন্দ্র কর্নাটক প্রদেশ বিজেপির অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট পদেই রয়েছেন। ইয়েদুরাপ্পা তার কনিষ্টপুত্রকে দলের এই পদে বসিয়েছিলেন। তিনি তাঁর কনিষ্ঠ পুত্রকেই তাঁর পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চেয়েই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বােমাই উপমুখ্যমন্ত্রী পদে ইয়েদুরাপ্পার কনিষ্ঠ পুত্রকে না বসালেও ইয়েদুরাপ্পা মন্ত্রিসভার তেত্রিশ জন সদস্যের মধ্যে তেইশকেই মন্ত্রী রেখেছেন। কেবল ছয়জন নতুন সদস্যকে মন্ত্রিসভায় শামিল করা হয়েছে।

কিন্তু এখনও ইয়েদুরাপ্পা ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মতানৈক্যের ফলে মন্ত্রীদের দফতর বন্টন করা সম্ভব হয়নি। নতুন মন্ত্রীদের বেঙ্গালুরু উন্নয়ন, পূর্ত দফতর, পঞ্চায়েত রাজ এবং জল সম্পদ দফতর বন্টন। করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

যে সকল মন্ত্রীদের আর মন্ত্রিসভায় ঠাই হয়নি তারা পরবর্তী রাজনৈতিক কৌশল ঠিক করতে রমেশ জারকিহলি ও সিপি যােগেশ্বরের সঙ্গে গােপন বৈঠক করছেন বলে জানা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বােমাই মন্ত্রিসভায় লিঙ্গায়েত গােষ্ঠীর আধিপত্য বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।

লিঙ্গায়েত গােষ্ঠী থেকে আট আসন, বােক্কালিগাস ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া গােষ্ঠী থেকে সাতটি করে আসনে জিতেছে বিজেপি। তপশিলি জাতির তিনটি ও একটি তপশিলি উপজাতি গােষ্ঠীর থেকে আসন পেয়েছে দল। মন্ত্রিপরিষদের অনুমােদিত সংখ্যা হল চৌত্রিশ।

কিন্তু বােমাই ঘােষণা করেছেন তিনি কেরল রাবার স্ট্যাম্প মুখ্যমন্ত্রী নন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, মানুষ বিজেপিকে ভােট দিয়েছে স্বচ্ছ ও দূর্নীতিমুক্ত প্রশাসন উপহার দিতে। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পার ফেলে যাওয়া জঞ্জাল মুক্ত করতে বােমাইকে বেগ পেতে হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।