পুজোয় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ

এই উৎসব মরশুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম (পিডিসিএল)।

Written by SNS Kolkata | September 27, 2019 3:24 pm

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

এই উৎসব মরশুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম (পিডিসিএল)। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, বিশেষ করে কয়লার সরবরাহ নিয়মিত হলে, পুজোর সময় বিদ্যুৎ ঘাটতির কোনও সম্ভাবনা নেই। একমাত্র চিন্তা উন্নতমানের কয়লা সরবরাহ নিয়ে। ভিজে কাদা মাখানাে কয়লা বয়লারের ক্ষতি করে ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই উন্নত মানের কয়লা সরবরাহের জন্য ইসিএল কর্তৃপক্ষকে অনুরােধ জানানাে হয়েছে।

কোনওভাবেই পুজোর সময় বিদ্যুৎ ঘাটতি হয় না– এবারও হবে না বলে বিদ্যুৎ নিগমের কর্তারা নিশ্চিত। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কথা বলা যায় না। গত এক মাসের বেশি সময় হল সরবরাহ ব্যবস্থা যাতে ত্রুটিমুক্ত হয় তার জন্য বিদ্যুৎ কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। রাজ্যের সবগুলি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ইউনিটগুলি ভালভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। যেসব ইউনিটে ত্রুটি ছিল, তা সারাই করা হয়েছে এখন উৎপাদন কেন্দ্রগুলির সব ইউনিটই চালু রয়েছে।

বিদ্যুৎ কর্তাদের মতে বিদ্যুতের সবচাইতে বেশি চাহিদা হয় মহাষষ্ঠী এবং মহাসপ্তমীতে। তারপর থেকেই চাহিদা পড়তে থাকে। এই সময় অফিস আদালত বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা হ্রাস পায়। অফিসগুলিতে আলাে জ্বলবে না, পাখা চলবে না, এসিও বন্ধ থাকবে। সুতরাং বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত হওয়ার সম্ভাবনা। নিগম সূত্রে বলা হয়েছে, যান্ত্রিক কারণে কোনও উৎপাদন কেন্দ্রে একের অধিক ইউনিট যদি বসে যায়, তাহলেও পুজোর সময় বিদ্যুতের আকাল হবে না। সেরকম কিছু না ঘটারই সম্ভাবনা। কিন্তু যদি তা ঘটে তাহলে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি থেকে বিদ্যুৎ কিনে অবস্থা সামাল দেওয়া হবে।

সবচাইতে বেশি চিন্তা, রাজ্যের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সাগরদিঘিতে কয়লার নিয়মিত সরবরাহ নিয়ে। এখানে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। প্রতিদিন প্রয়ােজন পড়ে ৩০,০০০ মেট্রিক টন কয়লা। এখানে যেহেতু দুটি ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ইউনিট রয়েছে, তাই কয়লার জোগান কম হলে ইউনিট বন্ধ করে দিতে হতে পারে। সাগরদিঘিতে দু’তিনদিনের কয়লা মজুত থাকে। এখানে পুজোর দিনগুলিতে যাতে নিয়মিত বেশি কয়লার সরবরাহ হয়, তার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

পুজোয় হুকিং এবং বিদ্যুৎ চুরির বিরুদ্ধে অভিযান চালানাে হবে। হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়া গ্রামাঞ্চলে একটি বিরাট সমস্যা। কোটি কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি হয়। তাই পুজোর উদ্যোক্তদের অনুরােধ জানানাে হয়েছে, তারা যেন বিধিসম্মতভাবে বিদ্যুৎ সংযােগ পুজো প্যান্ডেলে নেন, হুকিংয়ের আশ্রয় না নেন। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে বলা হয়েছে, এবারও গ্রামাঞ্চলে লাে-ভােল্টেজ সমস্যা রয়েছে। কারণ অনেক অঞ্চলে দূর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় বলে পরিমিত বিদ্যুৎ পৌঁছয় না। সেই কারণেই চেষ্টা হচ্ছে ছােট ছােট ট্রান্সমিশন সেন্টার তৈরি করতে। এ ব্যাপারে গ্রামবাসীদের সহযােগিতা চাওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ নিগমের এক কর্তা জানালেন, এই সেন্টার তৈরি করতে জমি দরকার। কিন্তু গ্রামের কেউ জমি ছাড়তে রাজি নন।

এবার গ্রীষ্মেও বিদ্যুতের চাহিদা অন্যবারের তুলনায় তেমন বাড়েনি। যদিও তাপপ্রবাহ অনেকদিন স্থায়ী ছিল। দু’একদিন রাজ্যের চাহিদা প্রায় সাত হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি উঠেছিল। স্থানীয়ভাবে লােডশেডিং এখনও হয় অল্প সময়ের জন্য, এর কারণ অবশ্য লােকাল ফল্ট, জানালেন নিগমকর্তা