• facebook
  • twitter
Tuesday, 6 May, 2025

গণআন্দোলনে খড়্গপুরে থমকে দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

রেশমি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মহকুমা শাসক বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য তিনি জেলাশাসককে জানান।

ফাইল ছবি

ফেব্রুয়ারির ৫-৬ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে হাজির দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের উদ্দেশে রাজ্য সরকারের বার্তা ছিল এই রাজ্যে শিল্পের অবস্থা অনুকূল। তারা নিশ্চিন্তে এই বাংলায় বিনিয়োগ করুন।

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর শহরের খড়গপুর ১ নং ব্লকের বরকলা অঞ্চলের ওয়ালিপুর মৌজায় রেশমি গ্রুপের পাইপ রং করার জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গণ আন্দোলনের চাপে মাঝপথে থমকে গিয়েছে। এই ছবি রাজ্যে শিল্পায়নের পক্ষে অনুকূল নয় জেনেও জেলা প্রশাসন প্রকল্পের বাধা হটাতে মানুষের মতামত নিয়েই এগোতে চাইছেন।

রেশমি গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ভাস্কর চৌধুরী বলেন, আমরা পাইপ তৈরি করছি। সেই পাইপের উপর উচ্চ তাপ সরবরাহ করে জিংকের আস্তরণ দেওয়া হচ্ছে এবং তারপরে আরও একটি আস্তরণ দেওয়া হচ্ছে। এই কাজ করার জন্য প্রকল্প এলাকায় আমাদের একটা চিমনি তৈরি করা প্রয়োজন। উচ্চমানের তাপ ব্যবহার করায় তৈরি হওয়া ধোঁয়া বের করে আনার জন্য এই চিমনি তৈরি করা হচ্ছে। এই ধোঁয়া কোনও দূষণ করবে না, এমনটাই দাবি রেশমি কর্তৃপক্ষের। ভাস্করবাবু বলেন, এলাকার মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে এই প্রকল্প থেকে দূষণ ছড়াবে বলে। মানুষকে সংগঠিত করে প্রকল্প এলাকায় তালা ঝুলিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে‌। তিনি জানান, আমাদের এই প্রকল্পে দেড় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। ইতিমধ্যেই আমরা দেড়শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। এই প্রকল্পে ছশো থেকে সাতশো লোকের কর্মসংস্থান হবে।

এই প্রকল্প এলাকার গা ঘেঁষে খড়গপুর শহরের ৩ ও ৪ নং ওয়ার্ডের পাঁচবেড়িয়া এলাকা। এলাকাবাসীদের বক্তব্য, রেশমি মেটালিকসের কালো ধোঁয়ায় সারা শহর ঢেকে গিয়েছে। নতুন প্রকল্পে রেশমি কর্তৃপক্ষের দূষণ হবে না বলে দেওয়া প্রতিশ্রুতি এলাকার মানুষ বিশ্বাস করতে পারছেন না। তাঁদের ঘাড়ের কাছে এই কারখানা দূষণ ছড়ালে তাঁদের বাড়িঘর বিক্রি করে এলাকাছাড়া হতে হবে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। রেশমি কর্তৃপক্ষ এই এলাকায় গুদাম তৈরি করলে কোনও অসুবিধে নেই। কিন্তু চিমনি আমরা কোনোমতেই করতে দেব না।

এলাকাবাসীর এই আন্দোলনে থমকে গিয়েছে কারখানা তৈরির কাজ। এলাকাবাসীদের তরফে কারখানার গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেশমি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মহকুমা শাসক বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য তিনি জেলাশাসককে জানান। এখন পুলিশ বিষয়টি দেখভাল করছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসক খুরশেদ আলী কাদরী বলেন, ‘মানুষের ক্ষোভ আছে। তাঁদের মতামত আমাদের কাছে অত্যন্ত জরুরি। রেশমি কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছিলেন। আমি এসডিওকে বিষয়টি জানিয়েছি। উনি এখন বিষয়টি দেখভাল করছেন। দু পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করেই কাজ এগোনো যাবে।’