মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হয়েছে মাত্র কয়েকমাস। এরই মধ্যে দিঘা সমুদ্র উপকূলে নির্মিত এই মন্দিরের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠেছে। ক্রমশ বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে জগন্নাথের রথযাত্রা উপলক্ষে। আর উত্তরোত্তর দর্শনার্থীদের ভিড় বৃদ্ধির ফলে এখানে ব্যবসায়িক শ্রীবৃদ্ধিও ঘটে চলেছে সমানতালে। একদিকে জগন্নাথ মন্দির এবং অন্যদিকে সমুদ্র উপকূল– দুইয়ে মিলে টেক্কা দিতে চলেছে পুরীকে।
জানা গিয়েছে, এবার পুরীর ভিড় এড়িয়ে বাঙালি পুণ্যার্থীদের একটি বড় অংশ রথের আসর বসিয়েছিল দিঘাতে। আগে যেখানে এই সময়কালে হোটেল ব্যবসায়ীরা তপ্ত গরমের কারণে মাছি তাড়াত, সেখানে দু’সপ্তাহ ব্যাপী এই রথযাত্রা অনুষ্ঠানে দিঘার অফ-সিজন পর্যটকে ভরে গিয়েছিল। এখানকার জগন্নাথ মন্দির ঘোরা, রথ দেখা আর দিঘার সমুদ্রের মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা একসঙ্গেই সম্পন্ন হয়েছে। দেদার বিক্রি হয়েছে পাঁপড়-জিলিপি-ডাব-কলা-কোল্ড-ড্রিঙ্কস সহ অন্যান্য নানান প্রয়োজনীয় উপকরণ।
হোটেল ব্যবসায়ীরাও এই সময়ে রেকর্ড পরিমাণে ব্যবসা করেছেন। একটি জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, দিঘার রথযাত্রার প্রথম বছরের কয়েকদিনেই প্রায় ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। এখানে এখন প্রায় সাড়ে আটশো হোটেল রয়েছে। মোট রুম রয়েছে ২৫ হাজার। সেই হোটেলগুলিতে এই কয়েকদিনে আয় হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সময়কালে টানা দু’সপ্তাহের জন্য প্রায় প্রতিটি হোটেলের ১০ থেকে ১২টি রুম পর্যটকে পূর্ণ ছিল। যাদের প্রতিদিনের ভাড়া দুই থেকে চার হাজার টাকা।
পাশাপাশি, দিঘার গণপরিবহন ব্যবসায়ীদেরও এই সময়ে প্রচুর আয় হয়েছে। বিশেষ করে দিঘার টোটো-অটো এবং দিঘাগামী বাস-ট্যাক্সি ও ক্যাব চালকদের মোট আয় হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া সমুদ্র উপকূলে যাঁরা খাবার ও উপহার সামগ্রী নিয়ে বসেন, তাঁদের এই সময়ে আয়ের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে রাজ্যের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলির অর্থনীতির তুলনায় দিঘার অর্থনীতি আগামীতে শীর্ষে উঠে আসতে চলেছে। সফল হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য।