সোমবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বাঙালিদের হেনস্থা ও রাজ্যের বাসিন্দাদের এনআরসি নোটিশ পাঠানো নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারও তিনি এ বিষয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণের ঝাঁঝ বজায় রাখলেন। তাঁর অভিযোগ, দিনহাটার বাসিন্দা উত্তম কুমার ব্রজবাসীর পর এবার আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বাসিন্দা অঞ্জলি শীলকে এনআরসির নোটিশ পাঠিয়েছেন অসম ফরেন ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ৫২ জন পরিযায়ী শ্রমিকের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে হরিয়ানা সরকার। এ বিষয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতার আশ্বাস, ‘কেউ ভয় পাবেন না। আমরা আমাদের কাজ করব। এভাবে বাংলা দখল করতে পারে না।’ এদিন মমতা ফের একবার পহেলগাম ও মণিপুর ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ফালাকাটার জটেশ্বরের বাসিন্দা অঞ্জলি শীলের নামে নোটিশ পাঠিয়েছে অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনাল। অঞ্জলির দাবি, তাঁর বাবার বাড়ি অসমে হলেও বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা। নোটিশ পেয়ে তাঁর পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। নোটিশের নিচের দিকে ফালাকাটা থানার নাম উল্লেখ থাকলেও নোটিসের উপরে কোচবিহার পুলিশ সুপারের অফিসের সিল রয়েছে। ২৬ জুন ইস্যু হওয়া এই নোটিশে অঞ্জলিকে আগামী ১৯ আগস্ট অসমের কোকরাঝাড়ে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়েই মঙ্গলবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা। এর আগে উত্তম ব্রজবাসীকে নোটিশ পাঠানো নিয়েও গর্জে উঠেছিলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অঞ্জলিকে পাঠানো নোটিশটি অহমিয়া ভাষায় লেখা হয়েছে। বাংলার ব্যাপারে অসম কীভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মমতা সাফ জানিয়েছেন, সীমারেখা লঙ্ঘন করে বাঙালিদের নিশানা তিনি বরদাস্ত করবেন না। দেশজুড়ে বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহে হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজ্যবাসীকে একের পর এক এনআরসি নোটিশ পাঠানোয় অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মাকে তুলোধনা করেছেন তিনি। মমতার অভিযোগ, অসম, গুরুগ্রামের ডিটেনশন ক্যাম্পে বহু মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে। এর জেরে তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খলা।
অন্যদিকে হরিয়ানা সরকারের পাঠানো একটি চিঠি তুলে ধরে বিজেপিকে নিশানা করেছেন মমতা। বাংলাদেশি সন্দেহে মালদহ, দক্ষিণ ও উত্তর দিনাজপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার ও উত্তর ২৪ পরগনার ৫২ জন পরিযায়ী শ্রমিকের ব্যাপারে জানতে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই ইস্যুতে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা বলেছেন, ‘ভাষা সন্ত্রাস চলছে। এবার প্রতি জেলা বেছে বেছে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যাতে বাংলাকে সঙ্কটে ফেলা যায়। মানুষকে আমরা রক্ষা করব।’ তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই ভাবে ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ দিয়ে বিজেপি সরকার যদি মনে করে মহারাষ্ট্র ও দিল্লির মতো পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনেও জিতবে তাহলে ভুল করছে। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ব্যাপারে অনুসন্ধান ইস্যুতে মমতার পাল্টা প্রশ্ন, ‘এখানে (পশ্চিমবঙ্গে) যাঁরা কাজ করেন তাঁদের সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানো হলে ভালো দেখাবে?’ এরপর পাঁচের পৃষ্ঠায়