• facebook
  • twitter
Wednesday, 23 April, 2025

ভারতের খেলনা রপ্তানি বিশ্বের বৃহত্তর অংশ দখল করতে প্রস্তুত

শিল্পের বর্তমান বাজারের আকার ১.৭ বিলিয়ন ডলার এবং ২০৩২ সালের মধ্যে ১০.৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধির হার সহ ৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল খেলনা শিল্প বিশ্বব্যাপী খেলনা বাজারের একটি বড় অংশ দখল করতে প্রস্তুত। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এটি ২০৩২ সালের মধ্যে ১৭৯.৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, খেলনা শিল্পের প্রবৃদ্ধি সরকারের উল্লেখযোগ্য সহায়তার পাশাপাশি দক্ষতা বিকাশ, প্রযুক্তি গ্রহণ এবং গুণমানের উন্নতির দ্বারা চালিত হবে। এটি বাণিজ্য পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয়েছে, যা দেখায় যে ভারতের খেলনা আমদানি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩০৪ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৫ মিলিয়ন ডলারে ৭৯ শতাংশ কমেছে। এদিকে, একই সময়ে রপ্তানি ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ১০৯ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১৫২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ফলস্বরূপ, ভারত খেলনা রপ্তানিকারক দেশ হয়ে উঠেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেশীয় উৎপাদনকে শক্তিশালী করতে সরকারের নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫-২৬-এ খেলনার জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা এই ক্ষেত্রের গুরুত্বকে পুনরায় নিশ্চিত করেছে। কর্মপরিকল্পনার লক্ষ্য হল ক্লাস্টার বিকাশ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ব্র্যান্ডের অধীনে উচ্চমানের খেলনা উৎপাদনের জন্য একটি শক্তিশালী উৎপাদন ইকোসিস্টেম তৈরি করা, যাতে এর মাধ্যমে খেলনা শিল্পকে আরও জোরদার করা যায়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২০ সালে গুণমান নিয়ন্ত্রণ আদেশ (কিউসিও) বাস্তবায়নের ফলে খেলনার জন্য কঠোর ভাবে মান নিশ্চিত করা হয়েছে। উপরন্তু, সরকার ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমদানি শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের মার্চ মাসে আরও বাড়িয়ে ৭০ শতাংশ করেছে। এই পদক্ষেপগুলি দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি খেলনা আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে।

শিল্পের বর্তমান বাজারের আকার ১.৭ বিলিয়ন ডলার এবং ২০৩২ সালের মধ্যে ১০.৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধির হার সহ ৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। আত্মনির্ভরতা, গুণমানের উন্নতি এবং উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়ার ফলে, ভারতের খেলনা শিল্প বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণের জন্য বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছে। এই ক্ষেত্রের প্রবৃদ্ধি কেবল অর্থনীতিকে শক্তিশালীই করবে না, ভারতকে বিশ্ব উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করার বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলবে।

ভারতীয় খেলনা শিল্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক এবং চিন-সহ ১০০ টিরও বেশি দেশে, বিশ্বব্যাপী উপস্থিতি প্রসারিত করেছে। খেলনা নির্মাতাদের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ অনলাইন মাধ্যমের কার্যকর ব্যবহার, যার দ্বারা আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের কাছে পৌঁছনো যাবে।

শিল্প ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য প্রচারেও জোর দেওয়া হবে, বিভাগের (ডিপিআইআইটি) এক প্রবীণ কর্মকর্তা বলেছেন- খেলনা শিল্পের জন্য একটি উন্নততর ভিত্তি তৈরির দৃঢ় প্রতিশ্রুতির অংশ হিসাবে, ভারত সরকার ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ খেলনার জন্য, একটি বৈশ্বিক বাজার তৈরির দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এই ক্ষেত্রটিকে অন্যতম চ্যাম্পিয়ন ক্ষেত্র হিসাবে চিহ্নিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, এই ক্ষেত্রের দৃঢ়তা বাড়ানোর জন্য সমস্ত দিক থেকে শিল্পের দিক থেকে দক্ষতা বাড়িয়ে, একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করা হবে।