রােগীদের পরিষেবা দিতে খােলা রইল আউটডাের

ইচ্ছে ছিল, তাই উপায় খুঁজতে অসুবিধা হয়নি। ডাক্তারদের বিক্ষোভের মধ্যেও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে চিকিৎসা পরিষেবা সচল রাখতে হাসপাতালের প্রেসিডেন্টের ইচ্ছে ছিল প্রকল।

Written by SNS Kolkata | June 13, 2019 5:58 pm

এনআরএস হাসপাতাল বন্ধ থাকায় হাসপাতালের বাইরেই বসে রইলেন রোগী ও তাদের পরিবার (Photo: IANS)

ইচ্ছে ছিল, তাই উপায় খুঁজতে অসুবিধা হয়নি। ডাক্তারদের বিক্ষোভের মধ্যেও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে চিকিৎসা পরিষেবা সচল রাখতে হাসপাতালের প্রেসিডেন্টের ইচ্ছে ছিল প্রকল। এদিন তাঁর ইচ্ছে এবং পেশার প্রতি দায়িত্ব কোনও এড়িয়ে যাননি চিকিৎসকরা। চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই ব্যতিক্রমী রসায়নের জেরে জুনিয়ার ডাক্তারদের বিক্ষোভের কোনও আঁচ পড়ল না বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে। শুধু এই হাসপাতাল নয়, ব্যতিক্রমী চিত্র দেখা গেল উলুবেড়িয়া মহকুমা ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেও।

এনআরএসে রােগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সােমবার রাতেই খন্ডযুদ্ধ হয় জুনিয়ার ডাক্তার এবং রােগীর পরিবারের লােকজনের মধ্যে। এই ঘটনার পর পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবিতে ধর্নায় বসেন ইন্টার্ন এবং জুনিয়ার ডাক্তাররা। বুধবার এনআরএসের ডাক্তারদের বিক্ষোভের সঙ্গে যুক্ত হন রাজ্যের বিভিন্ন জেলার চিকিৎসকরা। এমনকি এই নিরাপত্তার দাবিকে সমর্থন করে বুধবার বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতালেরই আউটডাের বন্ধ ছিল। স্বাভাবিকভাবেই এর জেরে চরম ভােগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ।

কিন্তু রাজের সার্বিক চিত্রের থেকে একেবারে আলাদা ছিল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চিত্রটা। আর পাঁচটা দিনের মতােই খােলা ছিল এখানকার আউটডাের। হাসপাতাল সুপার নিজে দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসা করেছেন রােগীদের।

কিন্তু আন্দোলন-বিক্ষোভের মাঝেও কিভাবে পরিষেবা সচল রাখা সম্ভব হল? বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট তথা কলকাতা পুরসভার পরিবেশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার জানান, রােগীদের পরিষেবা দেওয়া শুধু ডাক্তারদের কর্ম নয়, ধর্মও। মঙ্গলবার রাতেই তিনি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের একাধিক ডাক্তার এবং হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে কথা বলেন।

স্বপনবাবুর কথায়, বিনা চিকিৎসায় যাতে কোনও ব্যক্তিকে ফিরে যেতে না হয় সেবিষয়ে ডাক্তারদের কাছে অনুরােধ করেছিলেন তিনি। তার এই অনুরােধে সাড়া দিয়েছিলেন চিকিৎসকরাও। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সুপার অনিমা হালদার জানান, এদিন সকাল থেকে আউটডােরে ২৫০ জন রােগী এসেছিলেন। তিনি নিজেও এদিন আউটডােরে রােগী দেখেছেন। এর মধ্যে ৫০ জন রােগীর টিকাকরণ হয়েছে বলেও দাবি অনিমাদেবীর।

এদিকে অন্যান্য হাসপাতাল বন্ধ থাকায় রােগীর চাপ বেড়েছিল এই হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষের দাবি, অনেকেই বিষয়টি জানতেন না। তবে যারা এদিন হাসপাতালে এসেছেন তাঁদের ফেরত যেতে হয়নি। রাজ্যজোড়া বিক্ষোভের মুখে এই হাসপাতালের আউটডাের সচল রাখার জন্য ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানান স্বপন সমাদ্দার।

বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের পথে হেঁটে রােগীদের চিকিৎসার জন্য আউটডোর খােলা থাকল উলুবেড়িয়া মহকুমা ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। বিক্ষোভকে সমর্থন করে বুধবার এই হাসপাতালের কয়েকজন ডাক্তার অবশ্য অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু পরিষেবা সচল ও স্বাভাবিক রাখতে চিকিৎসার জন্য আউটডােরে বসেন স্বয়ং হাসপাতাল সুপার সুদীপ রঞ্জন কাড়ার।

তাঁর কথায় , পরিষেবা বন্ধ রাখার কোনও সরকারি নির্দেশিকা নেই। তাই সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই আউটডাের সচল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন এনআরএস হাসপাতালে আহতদের প্রতি সমবেদনা জানান উলুবেড়িয়া হাসপাতাল সুপার। এছাড়াও বসিরহাট জেলা হাসপাতালের আউটডােরও এদিন খােলা ছিল বলে জানা গিয়েছে।