• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

জোড়াফুলের দখলে ছোট লালবাড়ি, গণতন্ত্রের উৎসবে, গণতন্ত্রের জয়, মাথা নত করে আরও বেশি কাজ করতে হবে: মমতা

বেলা ১২-০৫ মিনিটে নাগাদ নবান্নে উদ্দেশে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরোন মুখ্যমন্ত্রী তখনই ভিক্ট্রি চিহ্ন দেখান মমতা। বলেন গণতন্ত্রের উৎসবে মানুষের জয়।

বিধানসভা ভোটেরই পুনরাবৃত্তি হল কলকাতার পুরভোটে। মঙ্গলবার বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে তৃতীয়বারের জন্য কলকাতা পুরনিগমের ক্ষমতায় এল তৃণমূল। বিপুল এই জয়কে ‘গণতন্ত্রের জয়’ বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতীয়স্তরেও এই জয় প্রভাব ফেলবে বলে দাবি করেছেন তৃণমুল সুপ্রিমো।

তাঁর কথায়, তৃণমূল উন্নয়নের যে দাবি করেছে, তা চোখে দেখা গিয়েছে। তাই মানুষ জোড়া ফুলের ওপর আস্থা রেখেছে। পুরভোটের এই বিপুল জয়কে মা মাটি মানুষকেই উৎসর্গ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

একই সঙ্গে মমতার নির্দেশ, মাথা নত করে কাজ করতে হবে। ভোটের ফল গণনার এক ঘন্টার মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এবার কলকাতাবাসী তৃণমূলেই ভরসা রেখেছে। ১৬টি বোরোই তৃণমূলের দখলে।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার ফলাফল (Photo:SNS)

বেলা বাড়তেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে উৎসাহী তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ভিড় লক্ষ করা যায় সেখানেই স্লোগান ওঠে খেলা হবে। সবুজ আবীর উড়তে থাকে।

বেলা ১২-০৫ মিনিটে নাগাদ নবান্নে উদ্দেশে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরোন মুখ্যমন্ত্রী তখনই ভিক্ট্রি চিহ্ন দেখান মমতা। বলেন গণতন্ত্রের উৎসবে মানুষের জয়।

এই জয় কি জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে? এর জবাবে তৃণমূল নেত্রী বলেন, এই ভোটে সর্বভারতীয় দল হিসেবে পরিচিত বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম লড়াই করেছিল।

কিন্তু ওরা মানুষের রায়ে পরাজিত। তৃণমূল তো আঞ্চলিক দল। তাও মানুষ উজাড় করে ভোট দিয়েছেন। মমতা বলেন, বিজেপি ভোকাট্টা, সিপিএম নো পাত্তা আর কংগ্রেস স্যান্ডউইচ।

বিজেপি আর সিপিএম-এর মধ্যে পড়ে চ্যাপ্টা হয়ে গিয়েছে। তৃণমুল সুপ্রিমো এদিনের জয়ের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, আমরা ভূমিপুত্র। মার্টিতে দাঁড়িয়ে কাজ করি। যা কথা দিই , সেই কাজ করি।

কলকাতা কত সুন্দর হয়েছে, মানুষ দেখতে পাচ্ছেন। তাই মানুষ শাসক দলকে ভোট দিয়েছে। তা ই আমরা জিতেছি। কলকাতার এই ভোট গোটা দেশকে পথ দেখাবে। পুরভোটের এই গণরায় আমাদের সাহায্য করবে।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, আগামী ২৩ ডিসেম্বর পুরবোর্ড গঠন নিয়ে দলীয়স্তরে তৃণমূলের বৈঠক হবে দুপুর তিনটেয়, মহারাষ্ট্র নিবাস হলে। সেই বৈঠকে ডাকা হবে দলের জয়ী প্রার্থীদের।

কলকাতা পুরভোটে ফলাফল প্রকাশের পরেই অসমের কামাক্ষ্যা মন্দিরে পুজো দিতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু কামাক্ষ্যা মন্দিরেই নয়, তিনি পুজো দিলেন বগলামুখী মন্দিরেও।

মঙ্গলবার কলকাতা পুরভোটের ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায় সবুজ ঝড়ে উড়ে গিয়েছে বিরোধীরা। ‘ছোট লালবাড়ি’ দখলের ভোটে ১৩৪ টি আসন নিজেদের দখলে রেখেছে তৃণমূল

দুপুর হতে না হতেই সবুজ সুনামির পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল । সেই আভাস মিলতেই তৃণমূল নেত্রী অসমের উদ্দেশে উড়ে যান । ওয়াহাটি বিমানবন্দরে নেমে সোজা চলে যান কামাক্ষ্যা মন্দিরে ।

গোটা মন্দির ঘুরে ঘুরে দেখেন গর্ভগৃহে গিয়ে পুজো দেন, প্রদীপ জ্বালান। মন্দিরে প্রবেশের পরেই মুখ্যমন্ত্রীর গলাতে অসমের ঐতিহ্যবাহী অসমিয়া গামছা পরিয়ে দেন মন্দিরের প্রধান পূজারি। সৌজন্যসূচক নমস্কারও জানান মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরের ভেতরে একটি পবিত্র জলাশয় রয়েছে।

খালি পায়ে সেই জলাশয়ে নেমে ভক্তিভরে জল অঞ্জলি দিয়ে সূর্য প্রণামও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি পুজো দেন বগলামুখী মন্দিরেও। এদিন বিকেলের উড়ানেই কলকাতায় ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী।

তবে কেন এই ঝটিকা সফর তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। প্রসঙ্গত, বাংলার বাইরে কোনও রাজ্যে গেলেই সেই রাজ্যের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে চান মুখ্যমন্ত্রী।

সম্প্রতি মুম্বই সফরে গিয়েও সিদ্দি বিনায়ক মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন মন্দির-মসজিদ-চার্চ সবই সমান সর্বত্রই যাই আমি। টিএমসি মানে টেম্পল, মস্ক, চার্চ-এমনটাই বলে থাকেন মমতা। তবে পুরভোটের জয়ের দিনই কামাক্ষ্যা মন্দিরে যাওয়া এবং ফিরে আসা নিয়ে নানান জল্পনা হচ্ছে।

কেউ কেউ বলছেন পুরভোটের জন্য মানত করে থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ফলাফল প্রকাশের পরে একটি বিজেপি শাস্তি রাজ্যে গিয়ে পুজো দেওয়া নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement