কমিশনকে কড়া চিঠি স্বরাষ্ট্রসচিবের

শেষ পর্বে নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকায় নিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের কাছে অভিযােগপত্র পাঠালেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য।

Written by SNS Kolkata | May 15, 2019 3:21 pm

কেন্দ্রীয় বাহিনী (প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র) (Photo: IANS)

নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপব্যবহার নিয়ে ধারাবাহিকভাবে অভিযােগ তুলছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ পর্বে নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকায় নিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের কাছে অভিযােগপত্র পাঠালেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য।

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙঘন, ভােটারদের ভয় দেখানাে, শক্তি প্রয়ােগসহ বিভিন্ন দফায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর একাধিক কার্যকলাপকে তুলে ধরা হয়েছে দেড় পাতার এই চিঠিতে। এছাড়া স্থানীয় পুলিশ অফিসারদের সাহায্য ছাড়াই কেন্দ্রীয় বাহিনীর কুইক রেসপন্স টিম তৈরির সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করার আবেদন করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ।

মঙ্গলবার, নবান্ন থেকে পাঠানাে চিঠিতে বিভিন্ন দফায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলির উল্লেখ করে তােপ দেগেছেন স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য। ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে গােপীবল্লভপুর, বিষ্ণুপুর, ময়না, ভগবানপুর, সবং-এ ভােটচলাকালীন যেভাবে বুথমুখী ভােটারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, সেসরে উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।

১২ মে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানাে নিয়ে প্রশ্ন তােলা হয়েছে। চতুর্থ দফার নির্বাচনে বীরভূম-এ পাড়ুই ও দুবরাজপুরে নদীয়ার হরিণঘাটা, থানাপাড়াতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অতি সক্রিয়তার ঘটনাগুলি বিস্তারিতভাবে জানানাে হয়েছে চিঠিতে। পঞ্চম দফার ভােটে তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ ও এবারের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মারধর করা, ষষ্ঠ দফায় বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘােষের নিরাপত্তারক্ষীর নিয়ম না মেনে অস্ত্রসহ বুথের ভিতরে ঢুকে পড়ার ঘটনাগুলির তীব্র সমালােচনা করা হয়েছে চিঠিতে।

বুথের ২০০ মিটার দুরে থাকলেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভােটারদের নিগ্রহ করা, নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙে কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাঠিচার্জ, বুথে ঢুকে পড়া নিয়ে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রসচিবের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় পুলিশকে সাহায্য করা। জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়ােগে সাহায্য করা, ভয় দেখানাে বা অযথা শক্তি প্রদর্শন নয়।

এদিকে যষ্ঠ দফার নির্বাচন থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিশেষ কুইক রেসপন্স টিম রাজ্য পুলিশের সঙ্গে কোনও যােগাযােগই রাখছে না। অথচ, ভিন রাজ্য থেকে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা না জানে এই রাজ্যের ভাষা, না চেনে এলাকর রাস্তাঘাট। তাই কোনও জায়গায় আইন শৃঙ্খলা সামলাতে তাদের যদি দ্রুততার সঙ্গে পৌছতে হয়, তাহলে স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকদের কাছেই তথ্যাবলী পেতে হবে। এই পরিস্থিতি শেষ দফার নির্বাচনের আগে কুইক রেসপন্স টিমের রাজ্য পুলিশ বাহিনীর সংযােগ রাখার বিষয়টিকে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানাে হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।

গত কয়েকদিন ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছিলেন। শুধু তাই নয়, আরএসএস-এর লােকদের ড্রেস পরিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান সাজানাে হয়েছে, এমন অভিযােগও করেছেন মমতা। সােমবারও তিনি নামখানার সভা থেকে রাজ্য পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনী যেখানে পারছে গুলি চালাচ্ছে।

মমতা প্রশ্ন করেন, রাজ্যের পুলিশ অফিসাররা কি ভয় পাচ্ছেন? মনে রাখবেন আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। নির্বাচন ঘােষণা হওয়ার পর থেকেই রাজ্য প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। তবে শেষ দফার নির্বাচনের আগে তৃণমূলনেত্রীর এই অভয়বাণী পেয়েই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর সরব হল কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে।