• facebook
  • twitter
Sunday, 26 January, 2025

ইতিহাস গবেষণায় বিঘ্ন ঘটছে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী অর্ণব দামের, অভিযোগ এপিডিআরের 

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী অর্ণব দাম বর্তমানে বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন। সেখানে পর্যাপ্ত আলোর অভাবে তাঁর পড়াশুনো করতে অসুবিধে হচ্ছে। পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় বই পাচ্ছেন না পিএইচডি পড়ুয়া অর্ণব। কারণ বর্ধমান সংশোধনাগারে ঠিকঠাক লাইব্রেরিই নেই। সংশোধনাগার পরিদর্শনের পর এমনটাই অভিযোগ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী অর্ণব দাম বর্তমানে বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন। সেখানে পর্যাপ্ত আলোর অভাবে তাঁর পড়াশুনো করতে অসুবিধে হচ্ছে। পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় বই পাচ্ছেন না পিএইচডি পড়ুয়া অর্ণব। কারণ বর্ধমান সংশোধনাগারে ঠিকঠাক লাইব্রেরিই নেই। সংশোধনাগার পরিদর্শনের পর এমনটাই অভিযোগ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির। সংশোধনাগারে বন্দি অবস্থায় ইতিহাস নিয়ে গবেষণার সুযোগ পেয়েছেন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন বলে সেখানকারই সংশোধনাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তাঁকে। তবে কারা কর্তৃপক্ষ পড়াশুনোর ব্যাপারে তাঁকে সাহায্য করছে বলে জানান সমিতির সদস্য জয়শ্রী পাল।তাঁর সঙ্গে আরও দুই রাজনৈতিক বন্দি ধৃতিরঞ্জন মাহাতো এবং চুনারাম বাস্কে পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ। ।

 
শনিবার গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি তথা এপিডিআরের তিন প্রতিনিধি বর্ধমান কেন্দ্রীয় জেলা সংশোধনাগারে যান। জেলের ভিতরকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। জয়শ্রী পালের দাবি, বন্দিরা প্যারোল পাচ্ছেন না। সংশোধনাগারে তাঁদের খাবারও ঠিকঠাক দেওয়া হচ্ছে না। জয়শ্রীর কথায়, ‘খাবারে পুষ্টির অভাব রয়েছে। ওঁদের পাতে ডিম দেওয়া হয় না, ডাল দেওয়া হয়।’ জয়শ্রী এ-ও জানান, পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় বইপত্র পাচ্ছেন না পিএইচডি পড়ুয়া অর্ণব। কারণ, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ঠিকঠাক লাইব্রেরিই নেই।
 
খড়্গপুর আইআইটি-র মেধাবী ছাত্র অর্ণব পড়াশুনো ছেড়ে সিপিআই মাওবাদীর রাজনৈতিক মতাদর্শে  আকৃষ্ট হয়ে সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন।  পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তারপর থেকেই বর্ধমান জেলে বন্দি তিনি। এরপরই  পড়াশুনোয় ডুব দেন তিনি। কারার  অন্তরালে থেকেই স্নাতক, স্নাতকোত্তর , ‘সেট’ উত্তীর্ণ হন অর্ণব। ইতিহাসে গবেষণা করতে চাইলে অনুমতি দেয় আদালত।  গত ২৬ জুন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দেন পুলিশের প্রহরায়। ৫ জুলাই মেধা তালিকা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিহাসে গবেষণার জন্য ইন্টারভিউয়ে ২৪৯ জনকে পিছনে ফেলে প্রথম হন অর্ণব। শুরু হয় তাঁর ইতিহাস নিয়ে গবেষণা।
সংশোধনাগারে রাজনৈতিক বন্দিরা কী অবস্থায় রয়েছেন, তা চাক্ষুষ করতে যান এপিডিআরের জয়শ্রী, কোয়েল গঙ্গোপাধ্যায় এবং দেবাশিস নন্দী। জেল সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মূলত তিনটি দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা। বন্দিদের পরিস্থিতি সম্পর্কে এপিডিআরের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘এখানে তিন রাজনৈতিক বন্দি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম অর্ণব দাম। তিনি এখান থেকে পড়াশোনা করছেন। আমরা রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগার ঘুরে ঘুরে দেখছি, সেখানকার পরিকাঠামো, খাবারের মান, চিকিৎসা ব্যবস্থা। এখানে  জায়গার তুলনায় বন্দির সংখ্যা বেশি। গায়ে গায়ে থাকতে হচ্ছে ওঁদের। এতে চর্মরোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ খাবারের মান নিয়ে বিশেষ জোর দিয়েছেন মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, খাবারের মান ভাল নয়। ডিমের বদলে প্রতি দিনই ডাল দেওয়া হচ্ছে। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট কম দেওয়া হয়। সংশোধনাগারে চিকিৎসকের অভাব। কেউ অসুস্থ হলে কি হবে জেল সুপারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, ‘হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।’ জেল সুপার খাবার এবং থাকার জায়গা নিয়ে বলেন, ‘এটা আধিকারিকদের বিষয়। সব জেলেই আয়তনের তুলনায় বন্দির সংখ্যা বেশি।’ উল্লেখ্য, গত জুলাই মাস থেকে বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অর্ণব।