• facebook
  • twitter
Sunday, 7 December, 2025

আইআইটি ভুবনেশ্বরে প্রথম গ্লোবাল ধর্ম স্টাডিজ সম্মেলনের সূচনা, গবেষণায় নতুন দিগন্ত

শ্রী গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ‘আজকের পৃথিবী মানসিক চাপ, পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতা ও সামাজিক ভাঙনের প্রবল সঙ্কটের সামনে দাঁড়িয়ে।'

নিজস্ব চিত্র

ধর্মকে কেবল আচার-অনুষ্ঠান বা বিশ্বাসের পরিসরেই সীমাবদ্ধ না রেখে তাকে নৈতিকতা, সামাজিক কর্তব্য, দর্শন, সংস্কৃতি এবং সভ্যতার ভিত্তি হিসেবে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতেই আইআইটি ভুবনেশ্বরে শুরু হল প্রথম বার্ষিক গ্লোবাল ধর্ম স্টাডিজ সম্মেলন। তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন ধর্মকে একটি গবেষণা-নির্ভর, আন্তঃবিভাগীয় একাডেমিক ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই মত আয়োজকদের।

এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে একাধিক শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে—যেমন বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ, ভুবনেশ্বরের ভক্তিবেদান্ত ইনস্টিটিউট, আইআইটি রূড়কির মানবিক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, কলকাতার ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টার, সাম্মাক্কা সারাক্কা সেন্ট্রাল ট্রাইবাল ইউনিভার্সিটি, ফ্লেম ইউনিভার্সিটির ইন্ডিয়া সেন্টার এবং হায়দরাবাদের ইএফএল বিশ্ববিদ্যালয়। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছেন এই সম্মেলনে।

Advertisement

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গোবর্ধন ইকোভিলেজের ডিরেক্টর ও ইস্কন গভর্নিং বডি কমিশনের সদস্য শ্রী গৌরাঙ্গ দাস। সভাপতিত্ব করেন আইআইটি ভুবনেশ্বরের পরিচালক প্রফেসর শ্রীপদ কামালকার। সম্মেলনের আহ্বায়ক ড. অক্ষয় কে. রথ ধর্মকে একটি বহুমাত্রিক, আন্তঃসাংস্কৃতিক গবেষণাক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

Advertisement

শ্রী গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ‘আজকের পৃথিবী মানসিক চাপ, পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতা ও সামাজিক ভাঙনের প্রবল সঙ্কটের সামনে দাঁড়িয়ে। ধর্ম এমন এক কাঠামো, যা সমাজে সুষমতা ফিরিয়ে আনতে পারে। গীতার শিক্ষা পরিচয়ের স্থিরতা, উদ্দেশ্যের পবিত্রতা এবং কর্মের দৃঢ়তা শেখায়—যা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।’

প্রফেসর কামালকার বলেন, ‘ধর্ম ভারতের গভীর সাংস্কৃতিক-দর্শনগত ঐতিহ্যের অনন্য বোধ। এর সরল অনুবাদ হয় না। তাই ধর্মের গবেষণামূলক অধ্যয়ন আরও শক্তিশালী হওয়া উচিত। এই সম্মেলনের মাধ্যমে আইআইটি ভুবনেশ্বর ধর্মকে একটি সভ্যতার ধারণা হিসেবে নতুন গবেষণার পরিসর তৈরি করতে চায়।’

ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সহ-আয়োজক ড. নরেশ চন্দ্র সাহু। এ বছর দুটি বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়—ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টার প্রবর্তিত ‘এ. সি. ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ পুরস্কার’ এবং প্রফেসর হোশাং মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠিত ‘হাবিজ মার্চেন্ট সেরা প্রবন্ধ পুরস্কার’। বক্তব্য রাখেন ফ্লেম ইউনিভার্সিটির প্রফেসর পঙ্কজ জৈন, অধ্যাপক হোশাং মার্চেন্ট, রীটা ডি. শর্মা, অশোক মহাপাত্র-সহ বিভিন্ন আইআইটি ও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা।

মানবিক বিজ্ঞান, আইন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, দর্শন, শিক্ষাবিদ্যা, সাংস্কৃতিক গবেষণা এবং প্রযুক্তি—এই সমস্ত ক্ষেত্রের অংশগ্রহণে DSC 2025 ধর্মকে নৈতিকতা, পরিবেশচেতনা এবং সামাজিক দর্শনের আধুনিক কাঠামো হিসেবে নতুন আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

Advertisement