• facebook
  • twitter
Sunday, 28 December, 2025

জেলবন্দি গ্যাংস্টারকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে মনোনয়ন জমা

পুণের পুরসভা ভোট ঘিরে চাঞ্চল্য

দু’হাত দড়িতে বাঁধা কুখ্যাত এক গ্যাংস্টার। সাদা ফুলহাতা শার্ট, কালো ট্রাউজার, মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা। কড়া পুলিশি পাহারায় প্রিজন ভ্যান থেকে নামানো হল। উদ্দেশ্য, পুরসভা ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া। পুণে পুরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমনই এক দৃশ্য ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহল ও সামাজিক মাধ্যমে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, অভিযুক্ত গ্যাংস্টারের নাম বান্দু আন্দেকর ওরফে সূর্যকান্ত আন্দেকর (যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি দৈনিক স্টেটসম্যান)।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাতি আয়ুষ কুমারকে খুনের অভিযোগে বর্তমানে পুণের ইয়েরওয়াড়া জেলে বন্দি বান্দু। শুধু তিনিই নন, ওই একই মামলায় জেলবন্দি তাঁর বৌদি লক্ষ্মী উদয়কান্ত আন্দেকর এবং পুত্রবধূ সোনালি বনরাজ আন্দেকরও। এই তিন জনই জেল থেকেই পুণে পুরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। পুণের বিশেষ আদালত শর্তসাপেক্ষে সেই আবেদন মঞ্জুর করে। যদিও আদালত তাঁদের কিছু নিষেধাজ্ঞা বেঁধে দিয়েছে। বলা হয়েছে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় কোনও র‍্যালি বা বক্তৃতা করা যাবে না।

Advertisement

শনিবার সেই নির্দেশ মেনেই ইয়েরওয়াড়া জেল থেকে কড়া নিরাপত্তায় বান্দুকে পুণে পুরসভার ভবানী পেট ওয়ার্ড অফিসে আনা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রিজন ভ্যান থেকে নামার পরই বান্দু চিৎকার করে বলেন, ‘ভাল কাজ মানেই আন্দেকর। ভোট ফর আন্দেকর।’ এক পুলিশ আধিকারিকের হাতে ধরা দড়িতে বাঁধা ছিল তাঁর হাত। সামনে পুলিশ, মাঝখানে বান্দু, পিছনে আরও এক পুলিশকর্মী— এমন করেই তাঁকে অফিসের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় ‘ভিকট্রি সাইন’ দেখাতেও দেখা যায় অভিযুক্ত গ্যাংস্টারকে।

Advertisement

সূত্রের খবর, নির্দল প্রার্থী হিসেবেই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বান্দু, তাঁর বৌদি ও পুত্রবধূ। তবে প্রাথমিক যাচাইয়ে তাঁদের মনোনয়নপত্র অসম্পূর্ণ থাকায় তা বাতিল করে দেন নির্বাচনী আধিকারিক। যদিও নিয়ম অনুযায়ী আরও তিন দিন সময় রয়েছে। সেই সময়ের মধ্যে সঠিক কাগজপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে তাঁদের।

পুলিশের দাবি, পুণেতে গত এক দশক ধরে আন্দেকর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য রয়েছে। গ্যাংয়ের মূল মাথা ছিলেন বান্দু নিজেই। তাঁর দুই ভাই উদয়কান্ত ও রমাকান্ত পুণে পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। রাজনৈতিক প্রভাবও কম নয় এই পরিবারের। ১৯৯৮ সালে আন্দেকর পরিবারের সদস্য বৎসল আন্দেকর পুণের মেয়র হয়েছিলেন। বান্দুর স্ত্রী রাজশ্রী ২০০৭ ও ২০১২ সালে পুরসভা ভোটে জয়ী হন। আবার তাঁর বড় ছেলে ২০১৭ সালে এসিপির টিকিটে পুরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

পুলিশ ও রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, জেলবন্দি অবস্থাতেও এই ভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ঘটনা পুণের রাজনীতিতে অপরাধের গভীর প্রভাবকেই নতুন করে সামনে এনে দিল। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে অস্বস্তি বাড়ছে।

Advertisement