• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

গঙ্গাসাগরের ভাঙন ও কপিলমুনির মন্দির রক্ষায় তৎপর রাজ্য সরকার

পরিদর্শনে নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি দল

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

গঙ্গাসাগরের ভাঙন রুখতে ও কপিলমুনি মন্দিরকে রক্ষার জন্য তৎপর রাজ্য সরকার। ভাঙনের জেরে ক্রমশ ছোটো হয়ে আসছে গঙ্গাসাগরের মেলা প্রাঙ্গন ও সাগরদ্বীপ। এমনকি কপিলমুনির মন্দির থেকে কমছে সাগরের দুরত্ব। এই পরিস্থিতিতে ভাঙন রুখতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য নেদারল্যান্ডসের আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা চেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই কারণে গঙ্গাসাগরের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন নেদারল্যান্ডসের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে কীভাবে গঙ্গাসাগরের ভাঙন রোধ করা যাবে তা নিয়ে রাজ্যের পূর্ত দপ্তর, সেচ দপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে বসে নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি দল। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গঙ্গাসাগরে নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি দল যাওয়াতে আশার আলো দেখছেন সাগরদ্বীপের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি দীৰ্ঘমেয়াদি সমাধানের। রিং কংক্রিটের বাঁধ ও নদী বাঁধ দিয়ে বিশালাকার ঢেউকে বাধা দিয়ে এই ভাঙন রোধ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বাঁধের কাজ সম্পূর্ণ হতে প্রায় ২ বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

বর্তমানে গঙ্গাসাগরের ভাঙন এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নদীতটে ভাঙনের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। কপিলমুনি মন্দির থেকে সমুদ্র সৈকতের দুরত্ব বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ১৫০-২০০ মিটারে। আরও কিছু বছর পরে অন্যান্য মন্দিরের মতোই পরিণতি হবে কপিলমুনির মন্দির। সমুদ্রের গভীরে তলিয়ে যাবে এই মন্দির। এছাড়া ভাঙনের জেরে ক্ষতি হচ্ছে গঙ্গাসাগর ও সাগরদ্বীপেরও। এই ভাঙন এলাকাবাসীর কাছে এক গুরুতর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। এই সমস্ত কারণ ও আগত গঙ্গাসাগরের মেলার কথা ভেবে রাজ্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছে।

Advertisement

রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পরে নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি দলের এক সদস্য জানান, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটার এবং সমুদ্রগর্ভ থেকে ৩০০ মিটার নিয়ে একটি রিং কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করা হবে। প্রাথমিকভাবে বিশালাকার ঢেউগুলোকে উপকূলে আসার আগেই সেই ঢেউগুলোকে ভেঙে দেওয়ার জন্য এই পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে বিশালাকার ঢেউগুলি সরাসরি উপকূলের আঘাত করতে পারবে না ৷ ফলে ভূমিক্ষয় অনেকটাই কমে যাবে। পাশাপাশি কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করে ভাঙন-রক্ষার পরিকল্পনা করা হবে।

Advertisement

গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান হরিপদ মণ্ডল বলেন, ‘১ নম্বর স্নানঘাট থেকে ৬ নম্বর স্নানঘাট পর্যন্ত স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নেদারল্যান্ডসের সমুদ্র বিশেষজ্ঞরা গঙ্গাসাগরে এসে পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে আধুনিক প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানকে একত্রে কাজে লাগিয়ে সমুদ্র ভাঙন রোধ করার সম্ভব হবে সে বিষয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি দল। ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই নদী বাঁধ নির্মাণ করার কাজ শুরু হবে। সম্ভবত এই কাজ সম্পন্ন হতে দু’বছর সময় লাগবে। এর ফলে এলাকাবাসী যেমন দুশ্চিন্তা মুক্ত হবে তেমনই কপিল মুনি মন্দিরের ভবিষ্যত সুনিশ্চিত হবে।’

Advertisement