কাশ্মীর ইস্যুতে ফের সরব হলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। নয়াদিল্লিতে ‘রাইসিনা ডায়লগ’ সম্মেলনে পশ্চিমী বিশ্বের কিছু দেশকে খোঁচা দেওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রসংঘের ভূমিকা আরও ‘শক্তিশালী এবং নিরপেক্ষ’ করার পক্ষে সওয়াল করেন বিদেশমন্ত্রী। কাশ্মীর দখল করে রাখার প্রসঙ্গে তুলে পাকিস্তানকেও নিশানা করেন তিনি। কাশ্মীর প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার কথা বলি। বিশ্বের বিভিন্ন নিয়মের মধ্যে যা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে অন্য কোনও দেশের এলাকায় সবথেকে দীর্ঘ অবৈধ উপস্থিতির সাক্ষী হয়ে রয়েছে ভারতের কাশ্মীর।’
জয়শঙ্কর প্রশ্ন তোলেন, আজ আমরা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কথা বলি। পশ্চিমীরা যখন অন্যান্য দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন, তখন তা গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা বলে বিবেচিত হয়। আর যখন অন্যান্য দেশ পশ্চিমে আসে, তখন মনে হয় তাঁদের উদ্দেশ্য খুবই খারাপ ? যদি আমাদের শৃঙ্খলার প্রয়োজন হয়, তাহলে ন্যায়বিচার থাকতে হবে, আমাদের একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রসংঘের প্রয়োজন। একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রসংঘের জন্য একটি ন্যায্য রাষ্ট্রসংঘের প্রয়োজন।
Advertisement
জয়শঙ্কর অসন্তোষের সুরে বলেন, আমাদের পূর্ব মায়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে, সেগুলো একেবারেই না, না। পশ্চিমী বিশ্বে আরও বেশি করে সামরিক অভ্যুত্থান হয়, যেখানে মনে হচ্ছে তারা ঠিক আছে?
Advertisement
জয়শঙ্কর তালিবানের প্রতি বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আফগানিস্তানকে ধরুন, তাহলে, একই আফগানিস্তান, একই তালিবান যারা দোহা প্রক্রিয়ায় একটি বহিরাগত ছিল, তাদের অসলোতে স্বাগত জানানো হয়েছিল, স্পষ্টতই, সেই সময়ে মানুষ এতে রাজি ছিল। আজ আবার আমরা আবার বলছি, তালিবানরা এই সব ভালো কাজ করছে না। তারা যদি ঠিক ছিল না , তাহলে অসলো এবং দোহায় কী নিয়ে আলোচনা হয়েছিল?’
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পরে জম্মু-কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিংহ ভারতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তখনই পাকিস্তানের মদতে সশস্ত্র হানাদর বাহিনী কাশ্মীরে আক্রমণ চালায়। ভারতের সেনাবাহিনী উপস্থিত হবার আগেই কাশ্মীরের বড় এলাকা পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির সময়ে যেখানে দুই দেশের সেনা মুখোমুখি দাঁড়ায়, সেটাই লাইন অফ কন্ট্রোল, আর পাকিস্তানের দখলে থাকা অংশটিকে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর বলা হয়।
পরবর্তীকালে এই বিষয়টি রাষ্ট্রসংঘে গেলে আন্তর্জাতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সেই ইতিহাসই স্মরণ করিয়ে দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কিছুদিন আগে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, পাকিস্তান যদি কাশ্মীরের চুরি করা অংশ ফেরত দেয়, তবেই কাশ্মীর সমস্যার পুরো সমাধান হবে।
Advertisement



