পহেলগাম হামলার জবাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটিগুলি ধ্বংসের পরে ভারতে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। জবাবে ভারত পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে। ইতিমধ্যে ধ্বংস করেছে সেখানকার ৮টি বিমানঘাঁটি সহ বিভিন্ন সেনা ছাউনি। অবশেষে বেগতিক বুঝে পাকিস্তানের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও ফের কাশ্মীর ইস্যু জিঁইয়ে রাখতে চাইছে পাকিস্তান। যুদ্ধবিরতির পর সোমবার দুই দেশের বৈঠকে সেই ইস্যু নিয়ে সরব হতে চলেছে শাহবাজ সরকার। পাকিস্তানের দাবি, ‘কাশ্মীরিরা যেন নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার পায়’! রবিবার ফের কাশ্মীর প্রসঙ্গকে হাতিয়ার করার চেষ্টা শুরু করেছে ইসলামাবাদ।
ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিকে স্বাগত জানিয়ে রবিবার ফের সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলিয়ে ফের বেঁকে বসতে চাইছে পাকিস্তান। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স অনুসারে, পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্যার যে কোনও ন্যায্য ও স্থায়ী নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অবশ্যই কাশ্মীরি জনতার নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
Advertisement
প্রসঙ্গত গত তিন দশক ধরে সারা বিশ্বে বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজে যুক্ত সন্ত্রাসবাদীদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। যার জন্য বিশ্বের অধিকাংশ দেশের চক্ষুশূল হয়েছে তারা। অন্যদিকে জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের সঙ্গে শত্রুতা করে আসছি ইসলামাবাদ। সন্ত্রাস যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, প্রতিবারই মোক্ষম জবাব দিয়েছে ভারত। মূলত কাশ্মীরের অজুহাত দিয়ে সেই সন্ত্রাস অব্যাহত রাখলেও ভারত প্রতিবার বার্তা দিয়েছে কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এবিষয়ে নাক গলানোর অধিকার পাকিস্তানের নেই। মুখে কাশ্মীরের মানুষের হিতাকাঙ্খী বলে পরিচয় দিলেও বারবার জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে কাশ্মীরের সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে নিরীহ ভারতীয়দের নির্মমভাবে হত্যা করে চূড়ান্ত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে পাক সেনা বাহিনী ও আইএসআই মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। ২৬/১১, উরি, পুলওয়ামা ও অতি সম্প্রতি পহেলগাম হামলা তারই জ্বলন্ত উদাহরণ। এতসব কিছুর পরেও ফের কাশ্মীর ধুঁয়ো তুলে সন্ত্রাসবাদ জিইয়ে রাখতে চাইছে ইসলামাবাদ। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি থিম গেলেও সোমবার দুই দেশের বৈঠকে সেই কাশ্মীর ইস্যু তুলতে চাইছে শাহবাজ সরকার।
Advertisement
এই অবস্থায় ট্রাম্প তাঁর বিবৃতিতে কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে নিজের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের সেই বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে ইসলামাবাদ। শান্তি ফেরানোর জন্য মার্কিন প্রশাসনের যে কোনও উদ্যোগকে তারা সমর্থন করবে বলে জানিয়েছে। পাক বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে সংঘর্ষবিরতির জন্য আমেরিকা ও অন্য ‘বন্ধু রাষ্ট্র’গুলির গঠনমূলক ভূমিকার কখা উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে ইসলামাবাদের দাবি, উত্তেজনা প্রশমন ও আঞ্চলিক স্থিতাবস্থার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সেজন্য আজ সোমবার ভারত-পাক আলোচনাতে যে বিষয়গুলি উঠতে চলেছে, তার মধ্যে অন্যতম প্রধান বিষয় হতে চলেছে কাশ্মীর সমস্যা। এই প্রসঙ্গ তুলে ভারতকে ফের বিব্রত করতে চলেছে পাকিস্তান। এমনটাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এদিন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ আদম জানিয়েছেন, মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা। সেখানে সিন্ধু জলচুক্তি, ও সন্ত্রাসবাদ দমনের পাশাপাশি কাশ্মীর সমস্যা নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটাই দাবি করেছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
Advertisement



