• facebook
  • twitter
Tuesday, 29 July, 2025

ইরানে মার্কিনি হামলা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ রাষ্ট্রসঙ্ঘের

রবিবার ভোরে ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে আমেরিকা হামলা চালিয়েছে। হামলা ‘অত্যন্ত সফল’ হয়েছে বলে দাবি করেছে আমেরিকা।

রবিবার ভোরে ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে আমেরিকা হামলা চালিয়েছে। হামলা ‘অত্যন্ত সফল’ হয়েছে বলে দাবি করেছে আমেরিকা। এর পরেও যদি ইরান শান্তিস্থাপন না করে, তবে আগামী দিনে আরও ভয়ানক হামলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাল্টা আমেরিকাকে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। ইরানে আমেরিকার হামলার পর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সমস্ত সদস্যকে উত্তেজনা প্রশমন এবং শান্তিস্থাপনের বার্তা দিয়েছেন তিনি।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমেরিকা যে ভাবে ইরানের বিরুদ্ধে আজ বলপ্রয়োগ করেছে, আমি তা দেখে অত্যন্ত শঙ্কিত। যে অঞ্চলে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে, সেখানে একটা ভয়ানক উত্তেজনা তৈরি করা হল। আগামীতে এই সংঘাত আরও বড় আকার নিতে পারে। পশ্চিম এশিয়া এবং সারা বিশ্বের জন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।’ গুতেরেসের বার্তা, ‘রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্য দেশগুলিকে উত্তেজনা প্রশমনের অনুরোধ জানাচ্ছি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতা বজায় রাখুন।’ এর পর আলাদা করে তিনটি লাইন লিখেছেন গুতেরেস— ‘সামরিক সমাধান বলে কিছু হয় না। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা কূটনীতি। শান্তিই আমাদের একমাত্র আশা।’

ইরানের নাতানজ, ইসফাহান এবং ফোরদো নিউক্লিয়ার কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ফোরদো। সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে ট্রাম্প এই হামলার বিষয়ে লিখেছেন, ‘আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে অত্যন্ত সফল ভাবে আক্রমণ চালিয়েছি। যার মধ্যে রয়েছে ফোরডো, নাতানজ এবং ইসফাহান। নিজেদের কাজ সম্পন্ন করে সমস্ত বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে। ইরানের ফোরডোতে বোমার একটি পূর্ণ পেলোড নিক্ষেপ করা হয়েছে। সমস্ত যুদ্ধবিমান এখন নিরাপদে বাড়ি ফেরার পথে। অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত এই ধরনের অভিযান চালাতে পারেনি।’ মার্কিন সেনাকে তাঁদের এই অভূতপূর্ব অভিযান ও সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে হামলার পরে শান্তির বার্তাও দেন ট্রাম্প। লেখেন, ‘এখন শান্তির সময়।’

এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ইরান। তারা জানিয়েছে, তাদের পরমাণুকেন্দ্রগুলি থেকে কোনও তেজস্ক্রিয় বিকিরণের খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ওই এলাকার মানুষ সুরক্ষিত। ইরানের অ্যাটমিক এনার্জি অর্গানাইজেশন একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘শত্রুদের সব ষড়যন্ত্রের মাঝেও আমরা ইরানি জাতিকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, হাজার হাজার বিপ্লবী ও উৎসাহী বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞের প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা এই কর্মসূচীর অগ্রগতিকে থামানো যাবে না। আমাদের পরমাণু কর্মসূচি অনেক শহিদের রক্তে গড়া, তা এগিয়ে যাবে।’

তিন পারমাণবিক কেন্দ্রে মার্কিন বিমান হামলার ঘটনায় ইরানের নেতা হোসেইন শরিয়তমাদারি ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এখন আমাদের বিলম্ব না করে পদক্ষেপ করার পালা। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে, আমাদের বাহরাইনে মার্কিন নৌবহরের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে হবে এবং একইসঙ্গে আমেরিকান, ব্রিটিশ, জার্মান এবং ফরাসি জাহাজের জন্য হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে হবে।’ এই আক্রমণের প্রত্যুত্তর দেওয়ার রাস্তা খুঁজছে ইরান বলে খবর। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়েছে, ‘এখন থেকে প্রতিটি আমেরিকান নাগরিকই টার্গেট।’ ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, ‘ট্রাম্প সাধারণত বড় বড় কথা বলেন। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। তবে কিছু বোমা ফেলে আমাদের পারমাণবিক প্রযুক্তিকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়।’