চিনা সেনার মহড়ার মাঝেই মার্কিন রণতরীও রওনা দিল দক্ষিণ চিন সাগরে

আমেরিকার সঙ্গে নতুন করে অশান্তিতে জড়িয়ে পড়ল চিন। চিনের উদ্বেগ বাড়িয়ে শনিবার দক্ষিণ চিন সাগরে মহড়া দেওয়ার জন্য পাল্টা দুটি রণতরী পাঠিয়েছে আমেরিকা।

Written by SNS New Delhi | July 5, 2020 3:15 pm

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত সংঘাত চলছে। এর মধ্যেই আমেরিকার সঙ্গে নতুন করে অশান্তিতে জড়িয়ে পড়ল চিন। বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে আমেরিকার সঙ্গে নতুন করে অশান্তি শুরু হয়েছে চিনের। চিনের উদ্বেগ বাড়িয়ে শনিবার দক্ষিণ চিন সাগরে মহড়া দেওয়ার জন্য পাল্টা দুটি রণতরী পাঠিয়েছে আমেরিকা। দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংও সামরিক মহড়া চালাচ্ছে।

পেন্টাগনের এই পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে বেজিং। আমেরিকাও পাল্টা তোপ দেগেছে চিনের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ চিন সাগরের উপকূলবর্তী একাধিক দেশও নিশানা করেছে বেজিংকে। দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন রয়েছে দক্ষিণ চিন সাগরের দখলদারি নিয়ে। চিন-আমেরিকার মধ্যে এবার নতুন স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হল ওই সাগরের দখলদারিকে কেন্দ্র করে।

পাঁচদিনের জন্য দক্ষিণ চিন সাগরের প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের কাছে সামরিক মহড়া চালাবে চিন ১ জুলাই থেকে একথা গত সপ্তাহেই চিন ঘোষণা করেছিল। যে দ্বীপটির কাছে সামরিক মহড়া হবে এই দ্বীপটির দখল নিয়ে চিনের সঙ্গে ভিয়েতনামেরও দ্বন্দ্ব রয়েছে। ফলে স্বস্তিতে নেই চিন।

দুটি মার্কিন রণতরী ইউএসএস নিমিজ এবং ইউএসএস রোনাল্ড ব্রেগান দক্ষিণ চিন সাগরের উদ্দেশে রওনা দেয় চিনের সেনা মহড়া চলাকালীন। তবে, এই সাগরের ঠিক কোথায় মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলি অবস্থান করছে তা জানা যায়নি।

দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল শুল্ক নিয়ে। এই অবস্থায় করোনা নিয়ে হংকং এবং চিনের আগ্রাসী পদক্ষেপ, সেই সঙ্গে বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে মার্কিন এয়ারক্রষ্ট ক্যারিয়ার ঢুকে পড়ায় দুই দেশ আমেরিকা ও চিনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও ঘোরাল হয়েছে।

এদিকে, মার্কিন নৌবাহিনী বেজিংয়ের নাম না করে বলছে, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকাকে স্বাধীন এবং মুক্ত করার সমর্থনেই’ এই পদক্ষেপ। এই অভিযানের উদ্দেশ্য নিয়ে ইউএসএস রোনাল্ড রেগানের স্ট্রাইক প্রপের কম্যান্ডার জর্জ এম উইকফ সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘আমাদের সঙ্গী এবং বন্ধু শক্তিকে বার্তা দিতেই এই পদক্ষেপ।’ আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখতেই এই পদক্ষেপ, এমনটাই জানিয়েছেন উইকফ।

শুক্রবার চিনের সামরিক মহড়ার নিন্দা করা হয় আমেরিকার তরফে। যদিও বেজিং আমেরিকার এই অভিযোগ উড়িয়ে দেয়। দক্ষিণ চিন সাগরে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য উল্টে ওয়াশিংটনকে দায়ী করেছে তারা। এদিকে, ভিয়েতনাম, ফিলিপিনসও সামরিক মহড়া নিয়ে চিনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, আগামীদিনে চিনের এই আগ্রাসী মনোভাব বেজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে।

ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, তাইওয়ান, ফিলিপিনস-এর মতো দেশ দক্ষিণ চিন সাগর ঘিরে রয়েছে। চিন ছাড়াও এই দেশগুলো দক্ষিণ চিন সাগর ঘিরে রয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই সাগরের গুরুত্ব অপরিসীম।

এই সাগরের ওপর দিয়ে গোটা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জাহাজ চলাচল করে। সেই সঙ্গে প্রচুর খনিজসম্পদ রয়েছে এই এলাকায়। ফলে দক্ষিণ চিন সাগরের কর্তৃত্ব নিজের হাতে রাখার জন্য মরিয়া বেজিং। কিন্তু আমেরিকার এই পদক্ষেপের ফলে রক্তচাপ বাড়ল বেজিংয়ের।