রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে এসে একাধিক প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখে পড়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। এসব সমস্যাকে ‘ইচ্ছাকৃত ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। অভিযোগের তির ছুঁড়েছেন সরাসরি রাষ্ট্রসঙ্ঘের দিকেই। এমনকি ঘটনার নেপথ্যে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের গ্রেপ্তারির দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনাগুলি ঘটে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৮০-তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে। সেখানেই ভাষণ দিতে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। একে একে তিনটি বড় সমস্যা তাঁকে পোহাতে হয়। প্রথমত, রাষ্ট্রসঙ্ঘের ভবনে প্রবেশের সময় ট্রাম্প ও তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া যখন এসক্যালেটরে উঠছিলেন, আচমকাই সেটি থেমে যায়। দ্বিতীয়ত, বক্তৃতার সময় তাঁর টেলিপ্রম্পটার কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তৃতীয়ত, ভাষণের পর পরিষদের অডিও সিস্টেমে গোলযোগ দেখা দেয়, যার ফলে অনেকেই তাঁর বক্তব্য শুনতে পাননি। এমনকি সামনের সারিতে বসে থাকা ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াও বুঝতে পারেননি ট্রাম্প ঠিক কী বলছেন।
Advertisement
এসব ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। তিনি লেখেন, ‘রাষ্ট্রসঙ্ঘের লজ্জা হওয়া উচিত।’ তাঁর মতে, এসক্যালেটর থেমে যাওয়াটা নিছক যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা ঘটানো হয়েছে। তিনি দাবি করেন, যদি তিনি ও মেলানিয়া সামান্য অসতর্ক হতেন, তাহলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।
Advertisement
বক্তব্য চলাকালীন টেলিপ্রম্পটার কাজ না করায়, ট্রাম্প প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভাষণে বারবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ থাকার ঘটনাকে ‘তৃতীয় ধাক্কা’ হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার কথা কেউ শুনতেই পায়নি। সামনের সারিতে বসা মেলানিয়া পর্যন্ত বলতে পারেনি আমি কী বলছিলাম।’
ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছে হোয়াইট হাউস ও মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবকে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্প দাবি করেছেন, এসক্যালেটরের নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজ ও ইমার্জেন্সি বাটনের রেকর্ড সংরক্ষণ করা হোক।
তবে এসক্যালেটর থেমে যাওয়ার ঘটনায় একটি ভিন্ন তথ্য সামনে এনেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ ভবনের নিরাপত্তা বিভাগ। তাদের বক্তব্য, ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত নয়। ট্রাম্পের ভিডিওগ্রাফারদের একজন অধিবেশন কক্ষে আগেভাগে প্রবেশ করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে এসক্যালেটরের ইমার্জেন্সি বাটনে চাপ দেন। তখনই এসক্যালেটরটি থেমে যায়। তখনও তিনি বুঝতে পারেননি, প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি এসক্যালেটরে ছিলেন।
যদিও এই ব্যাখ্যা মেনে নেয়নি হোয়াইট হাউস। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং এখনও তদন্ত চলছে।
Advertisement



