• facebook
  • twitter
Thursday, 21 August, 2025

বিদেশি পড়ুয়াদের জন্য ভিসা দেওয়া স্থগিত রাখল ট্রাম্প প্রশাসন

নতুন নির্দেশের ফলে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১০ লক্ষের বেশি পড়ুয়া প্রতি বছর আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হন। 

ফাইল চিত্র

বিদেশি পড়ুয়াদের জন্য ছাত্র ভিসার সমস্ত নতুন ইন্টারভিউ স্থগিত করে দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ বিদেশি পড়ুয়ার উদ্যোগকে অচল করে দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর স্বাক্ষরিত একটি উদ্ধৃতি মারফত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত দূতাবাস এবং বিশ্বের সমস্ত মার্কিন কনস্যুলেটকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, নতুন নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত আমেরিকায় পড়াশুনো করতে ইচ্ছুক ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক নেটওয়ার্কগুলি সম্পূর্ণভাবে যাচাই করা হবে। এই প্রক্রিয়া অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এফ এম এবং জে ভিসা বিভাগের অধীনে যে সব আবেদনকারী থাকবেন, সেই সমস্ত বিদেশী পড়ুয়াদের জন্য এই যাচাইকরণ প্রযোজ্য। তাঁদের কোনও পোস্ট আমেরিকার জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক কিনা, তা বিবেচনা করে দেখবে মার্কিন প্রশাসন।

বিশ্বের সমস্ত দেশের ক্ষ্রেত্রেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে বলে জানা গিয়েছে। হোয়াইট হাউসের তরফে মার্কিন দূতাবাসগুলিকে আপাতত ভিসার ইন্টারভিউপর্ব স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। তবে একই সঙ্গে জানানো হয়েছে এই সিদ্ধান্ত সাময়িক। তবে কতদিন নির্দেশ কার্যকর থাকবে সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যাচাইকরণ হল দেশে প্রবেশের জন্য ভিসা দেওয়ার আগে আবেদনকারীর অনলাইন কার্যকলাপ পরীক্ষা করার প্রক্রিয়া।আমেরিকায় তাদের পড়াশোনা করা উচিত কিনা তা নির্ধারণ করতে কর্মকর্তারা পড়ুয়াদের সামাজিক নেটওয়ার্কগুলির প্রোফাইল পর্যালোচনা করবেন। গত বছর আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্যালেস্তাইনপন্থী বিক্ষোভের পর বিদেশি পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। কারণ সেই সময় আন্দোলনকারীরা সমাজ মাধ্যমকে ব্যবহার করেছিলেন। তার ফলে অনেক পড়ুয়াকে নিজেদের দেশে ফেরতও পাঠানো হয়েছিল। তাই সমাজ মাধ্যমে তারা কোনও গোষ্ঠীতে যুক্ত কিনা, তার সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক আদর্শ কী সেই সব কিছুই খতিয়ে দেখা হবে।

মার্কিন বিদেশ ও অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। তিনি  জানান, ‘আমরা নজরদারি চালাব। আমাদের হাতে যেসব প্রযুক্তি আছে, সেই সব ব্যবহার করে বিচার করা হবে ভিসার আবেদনপত্র। পড়ুয়া হোক বা অন্য কেউ, আবেদনকারীদের মধ্যে কোনও অপরাধপ্রবণতা যে নেই তা নিশ্চিত করতে হবে। যতদিনের জন্যই আমেরিকার ভিসা নেওয়া হোক না কেন, এই পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতেই হবে। আশা করি, কাদের আমেরিকায় প্রবেশের যোগ্যতা রয়েছে তা আমরা এই নজরদারি থেকে বুঝতে পারব।’

উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি পড়ুয়াদের বহিষ্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এবার সব শিক্ষাক্ষেত্রের বিদেশি পড়ুয়াদের উপরেই কড়াকড়ি হচ্ছে। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হওয়া সহজ নয়। পড়ুয়াদের তাদের যোগ্যতা অর্জন ছাড়াও অন্তত কয়েক মাস আগে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রস্তুতি নিতে হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতা পর্যালোচনা করার পর, জিম্যাট এবং জিআরই-এর মতো পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে  ভর্তির জন্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করে। তবে ভিসা ইন্টারভিউতে শিক্ষার্থীরা ব্যর্থ হলে সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। এবার নতুন নির্দেশের ফলে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। প্রসঙ্গত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১০ লক্ষের বেশি পড়ুয়া প্রতি বছর আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হন।